কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ব্যবসা- বানিজ্যে স্থবিরতা, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

Published: 21 May 2019   Tuesday   

প্রচন্ড খরা ও তাপদাহের কারণে দেশের বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদ প্রায় পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে বিভিন্ন ব্যবসা-বানিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। কয়েক লাখ খেটে খাওয়া মানুষ বেকারত্বে ভুগছে। সরকার হারচ্ছে কোটি-কোটি টাকা।

 

দেশের বৃহৎ এই হ্রদের উপর নির্ভর করে চলছে মৎস্য ভান্ডার,পর্যটন শিল্প,ব্যবসা বানিজ্য। আর এ কাজের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে কয়েক হাজার ছোট,বড় ব্যবসায়ী। বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি বিগত কয়েক বছরের তুলনায় সর্বাধিক হ্রাস পেয়েছে। এতে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। সচল আছে মাত্র ১টি ইউনিট। ২৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থলে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট। পানি কমে যাওয়ার ফলে কাপ্তাই উপজেলাসহ প্রায় ৬টি উপজেলার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।এতে সরকারী কর্মকর্তা -কর্মচারীদেরকে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে কর্মস্থলে পৌছাতে হচ্ছে। সঠিক সময়ে আবার কর্মস্থলে না পৌঁছাতে পারায় অনেককে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানা গেছে। হ্রদ শুকিয়ে যাওয়ার ফলে হৃদের অনেক এলাকা বিশাল মাঠে পরিনত হয়েছে। দূরন্ত শিশুরা প্রতিনিয়ত সেখানে ফুটবল,ক্রিকেটসহ হরেক রকম খেলায় মেতে উঠেছে।


পানি শুন্যতার ফলে বিভিন্ন শিল্প-কলখারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে না পারায় অতিকষ্টে দিন যাপন করছে। বাঁশ ব্যবসায়ী আবুল হাসেম জানান, দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর যাবত বাঁশ ব্যবসা করছি, কিন্ত এবছরের মত আর পানি কমতে কখনো দেখিনি। প্রতিনিয়ত পানি কমছে। বর্তমানে আমাদের ব্যবসা শুন্যের কোটায়। সাম্পান ও ইঞ্জিন চালিত বোট মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোঃ ইদ্রিছ জানান,পানি অতিদ্রুত কমে যাওয়ার ফলে লোকজনের যাতায়াত একেবারে কমে গেছে। বিশেষ করে পর্যটন শিল্পে ভাটা নেমেছে বলে তিনি জানান। এলাকার সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন,কাপ্তাই বাঁধ তৈরির পর হতে অদ্যবধি হ্রদে ড্রেজিং না করার ফলে হ্রদের নব্যতা একেবারে হ্রাস পেয়েছে এবং হ্রদে স্তর ভরাট হওয়ার দরুন দিনদিন পানি শুকিয়ে যাওয়ায় হ্রদের এ করুন দশা। এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে,রুলকার্ভ অনুযায়ী বর্তমানে হ্রদে পানি থাকার কথা ৭৮.২২ এমএসএল(মীন সী লেভেল)।কিন্তু সেখানে পানি রয়েছে ৭২.৪৫ এমএসএল। পানির উচ্চতা ৬৮ এমএসএলে নেমে গেলে পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব ইউনিটই বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানান,কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএ আবদুজ্জাহের।


প্রসঙ্গত, কয়েক মাস পূর্বে পাবর্ত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রনালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটি কাপ্তাই সফর কালে হ্রদকে ড্রেজিং করা হবে বলে প্রেস ব্রিফিং কালে সাংবাদিকদের জানান। হ্রদে নব্যতা ফিরে আনতে এর বিকল্প নেই বলেও ওই কমিটি জানান। এতে সরকারের কোটি,কোটি টাকা রাজস্ব আয় করার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও কমিটি মন্তব্য করেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত