বিশ্বের অন্যান্য স্থানের ন্যয় রাঙামাটির দূর্গম বিলাইছড়ি পাংখোয়া পাড়ায় মঙ্গলবার বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন। এর মধ্যে রয়েছে বিশেষ প্রার্থনা, কেক কাটা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’সহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাংখোয়াসহ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পালন করেছে এই বিশেষ দিনটি।
দিনটি উদযাপন উপলক্ষে সকালে বিলাইছড়ি পাংখোয়া পাড়া বড়দিন উদযাপন কমিটি এলাকার মাঠে এক আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়ার সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, বিলাইছড়ি জোন এর সিনিয়র ক্যাপ্টেন মোঃ মোঃ বিল্লাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিলাইছড়ি তিনকুনিয়া মৌজার হেডম্যান ও বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান এ্যংলিয়ানা পাংখোয়া। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পাংখোয়া পাড়া গীর্জা পরিচালনা কমিটির লাল চুয়াক লিয়ানা পাংখোয়া। অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রহুল আমিন, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জ্যোর্তিময় চাকমা ক্যারল, জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল মওলা, বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সুরেশ কান্তি তংচঙ্গ্যা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য অভিলাষ তংচঙ্গ্যা’সহ সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নের্তৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনাসভার শুরুতেই মঙ্গঁলবাণী পাঠের মাধ্যমে নিজের পরিশুদ্ধি এবং জগতের সব মানুষের জন্য মঙ্গল কামনা করা হয়। সে প্রার্থনায় অংশ নেয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু। প্রার্থনা শেষে অতিথিরা কেক কেটে দিবসটি উদযাপন করে। পরে স্থানীয় ও পাংখোয়া সম্প্রদায়ের শিল্পীদের পরিবেনায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহি নৃত্য ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। এর আগে অতিথিরা ফেস্টুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
এদিকে রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের বসন্ত পাড়া পাংখোয়ায় বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বড় দিন উদযাপিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় বক্তারা খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। দেশের সকল জাতিগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও যার যার ধর্ম যেন নির্ভিঘ্নে পালন করতে পারে সে লক্ষে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। বক্তরা বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে চলেছে। সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে যার যার ধর্ম ও উৎসব সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে পালন করেত পারে সে লক্ষে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মান করে দিচ্ছে। বক্তরা বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনের সমাগমই প্রমান করে আমরা শান্তি ও সম্প্রীতিপ্রিয় মানুষ। আমাদের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই। একে অন্যের উৎসবে যোগদিয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়াটায় আমাদের বড় ধর্ম। আগামীতে এই সম্প্রীতি অটুট রাখতে দেশনেত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই। তাই দেশনেত্রীর হাতকে শক্তিশালি করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান বক্তারা।
উল্লেখ্য,এ দিনে বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেন খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়া, মানব জাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করা এবং সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার করতে তার আগমন ঘটেছিল।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.