রাঙামাটি ২৯৯নং আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতা উষাতন তালুকদার বলেছেন, জনগণের অধিকারের জন্য নয় ব্যাক্তিগত স্বার্থের জন্য পাহাড়ের কিছু মানুষ জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছে। তারা জাতির সাথে বেইমানী করছে। চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হতিয়ে নিচ্ছে। পার্বত্য চুক্তি লংঘন করে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধার করতে তারা জুম্ম জনগণের সামগ্রীক অধিকারকে জলাঞ্জলী দিচ্ছে।
সোমবার রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় দিনভর নির্বাচনী প্রচার সভায় এসব কথা বলেন ঊষাতন।
জনসংযোগকালে উষাতন তালুকদার বাঘাইছড়ি উপজেলার শিছকের গলাচিপা, উলুছড়ি,আমতলী,খেদারমারাসহ বিভিন্ন স্থানে পথ সভা করেন। পথ সভায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্যে দেন উপজেলা পরিষদ চেয়াম্যান বড়ঋষি চাকমা, জনসংহতি সমিতির ভূমি বিষয়ক সম্পাদক চিংহ্লামং চাক প্রমুখ।
পথ সভায় উষাতন তালুকদার আরো বলেন, অধিকার আদায়ের জন্য পাহাড়ের জনগণ দীর্ঘ ২৫ বছর আন্দোলন সংগ্রাম করে সরকারকে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করে। এ চুক্তির ফসল পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন হয়। চুক্তি অনুযায়ী মন্ত্রনালয়ে একজন পূর্ণ মন্ত্রী, জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্য থাকার কথা। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় এগুলো জনকল্যাণে আসছে না। মনোনীত ব্যাক্তি দিয়ে জেলা পরিষদ চালানো হচ্ছে। ফলে সুবিধাবাদী ও দালাল শ্রেণীর ব্যাক্তিরা এ পরিষদে সদস্য হতে চায়। সদস্য হতে পারলে ঘুষ বানিজ্যে লিপ্ত হয়। জনগণের কাছে এদের কোন জবাবদিহিতা নেই। তাদের জবাবদিহি করতে হয় যারা তাদের চেয়ারে বসিয়ে দেয় তাদের কাছে।
জাতীয় নির্বাচন আসলে এরা জনসংহতি সমিতিকে সমালোচনা করে জনগণের ভোট চায়। জেলা পরিষদ জনসংহতি সমিতির আন্দোলনের ফসল কিন্তু অর্থের পেছনে দৌড়াতে দিয়ে এসব দালালরা তা ভুলে যায় বলেন উষাতন।
জেএসএসকে সংসদ নির্বাচন করতে বাধ্য করা হয়েছে উল্লেখ করে ঊষাতন তালুকদার আরো বলেন, আগে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে সংসদে পাঠানো হয়েছে কিন্তু এরা আমাদের কথা বলেনি। ওরা পার্বত্য চুক্তি লংঘন করে পার্বত্য মন্ত্রনালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর বিপরীতে প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী পদ পেয়ে চুপ করে লুফে নিয়েছিল। কোন প্রতিবাদ করেনি।
বিএনপি দল ও মনি স্বপন দেওয়ানকে বেইমান উল্লেখ করে ঊষাতন বলেন ২০০১ সালে জেএসএসের সমর্থন পেয়ে সংসদে যায় কিন্তু যখন তাকে উপমন্ত্রীর পদ দেওয়া হচ্ছে তখন জেএসেএসের সাথে কোন আলোচনা করেনি। প্রতিবাদ পর্যন্ত করেনি। অনদিকে চাকুরী ছেড়ে সব কিছু ত্যাগ করে জেলা বিএনপির হাল ধরা এড. দীপেনকে মনোনয়ন দেয়নি বিএনপি। এখানেও বেইমানী করেছে বিএনপি। এখন মনি স্বপন দেওয়ান জেএসএস তাকে শেষ পর্যায়ে সমর্থন দেবে এই অপ প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
জেএসএস পরীক্ষিত দল উল্লেখ করে ঊষাতন তালুকদার বলেন, আমরা জাতির সাথে বেইমানী করিনি। আমরা কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারতাম কিন্তু তা করিনি।
পাহাড়ে জনগণের অধিকার আদায়ের পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই উল্লেখ করে উষাতন বলেন, চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন জোরদার করার জন্য সংসদে নিজেদের লোক পাঠানো প্রয়োজন আছে। এজন্য সিংহ মার্কাকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর বিপুল ভোটে বিজয়ী করে সংসদে পাঠানোর আহবান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.