চলমান বাস্তবতায় পাহাড়ে সংসদ নির্বাচন অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়-সন্তু লারমা

Published: 29 Nov 2018   Thursday   

পাহাড়ের চলমান বাস্তবতায় পাহাড়ে আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচন অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্রি বোধিপ্রিয় লারমা( সন্তু লারমা)।


পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের উপর এমনিতর দমন-পীড়ন, ফ্যাসীবাদী শাসন ও নাজুক পরিস্থিতিতে সারাদেশের সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামেও একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এধরনের পরিস্থিতি পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য কখনোই অনুকূল নয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযান আরো জোরদার করা হয়েছে। এযাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের নামে পরিচালিত প্রত্যেকটি অভিযানে কার্যত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনরত নেতা-কর্মী ও ব্যক্তিবর্গের উপর দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কার্যত ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অনুকূলে সহায়তা করার হীনউদ্দেশ্যে জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে এধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাঙামাটি শহরসহ তিন পার্বত্য জেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাটে ও হাট-বাজারে নতুন নতুন চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে এবং এসব চেকপোষ্টে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করা হচ্ছে।


পার্বত্য চট্টগ্রামে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এ ধরনের গণবিরোধী তৎপরতা অচিরেই বন্ধ করা জরুরী বলে তিনি মন্তব্য করেন।


বৃহস্পতিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২১তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন।


সন্তু লারমা অভিযোগ করে আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দুই মেয়াদে এক দশকধওে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। প্রকৃতপক্ষে চুক্তির ৭২ টিধারার মধ্যে ২৫ টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং মৌলিক বিষয়সমূহসহ দুই-তৃতীয়াংশ ধারা এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।


পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে সরকারের মন্ত্রী, এমপিরাদেশে-বিদেশে অপপ্রচারে ব্যস্ত রয়েছে দাবী করে আরো বলেন, পার্বত্য চুক্তির ৭২ টি ধারার মধ্যে ৪৮ টি সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন, চুক্তির ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে, সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক, এ সরকারের আমলেই চুক্তির অবশিষ্টাংশ সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হবে কিংবা পৃথিবীর কোনো চুক্তিই শতভাগ বাস্তবায়িত হয়নি, পার্বত্য চুক্তির মতো বিশ্বের কোনো চুক্তিই এত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়নি- বলে এ ধরনের নানান অসত্য বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে দেশে-বিদেশে অপপ্রচারে ব্যস্ত রয়েছে।


সংবাদ সন্মেলনে ঐক্য ন্যাপের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং সহ জনসংহতি সমিতির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ এবং প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সন্মেলনে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জনসংহতি সমিতির তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা।


উল্লেখ্য, দীর্ঘ দুই দশকের অধিক সময় ধরে চলা পাহাড়ের সশস্ত্র সংঘাত অবসানের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।


জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ”শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে চরম দুর্নীতি, চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি, দলীয়করণ, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের অসদিচ্ছা ও অনীহা, শাসকগোষ্ঠীর সৃষ্ট পার্বত্য চুক্তি ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থি সশস্ত্র সংগঠনসমূহের অত্যাচার ও অনাচার, বেআইনী অনুপ্রবেশ ও ভূমি বেদখল, গ্রেপ্তার,তল্লাশি অভিযান, মিথ্যা মামলা, দমন পীড়ন ও সেনা সন্ত্রাসের ফলে আজ জুম্ম জনগণ গভীরভাবে শঙ্কিত ও শাসকগোষ্ঠীর উপর ক্ষুব্ধ।”


গেরিলা নেতা সন্তু লারমা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার দুই মেয়াদে এক দশক ধরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির অবাস্তবায়িত মৌলিক বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ”প্রকৃতপক্ষে চুক্তির ৭২ টিধারার মধ্যে ২৫ টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং মৌলিক বিষয়সমূহসহ দুই-তৃতীয়াংশ ধারা এখনো অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে।”


সন্তু লারমা আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কেবল চুক্তির মৌলিক বিষয়সমূহ অবাস্তবায়িত অবস্থায় ফেলে রেখে দেয়নি, উপরন্তু একের পর এক চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম জাতীয় অস্তিত্ব বিলুপ্তির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার ফলশ্রুতিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার সমাধান হয়নি,পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম (উপজাতীয়) অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য তথা জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব সংরক্ষণ নিশ্চিত হয়নি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সাথে সঙ্গতি বিধানকল্পে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রযোজ্য আইনসমূহ সংশোধন করা হয়নি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্বলিত বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেনি,পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি-বাঙালি স্থায়ী অধিবাসীদের প্রত্যক্ষ ভোটাধিকারের ভিত্তিতে নির্বাচনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠিত হয়নি,তিন পার্বত্য জেলার সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, পর্যটন, মাধ্যমিক শিক্ষা, উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়গুলো এখনো তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তর করা হয়নি,পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন কার্যকর হয়নি। আঞ্চলিক পরিষদকে অথর্ব করে রাখা হয়েছে, সেটেলার বাঙালি, অস্থানীয় ব্যক্তি ও কোম্পানী, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভূমি বেদখল বন্ধ হয়নি এবং বেদখলের ফলে সৃষ্ট ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি,‘অপারেশন উত্তরণ’সহ সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়নি, ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বলবৎ সেনাশাসনের অবসান হয়নি,ভারত প্রত্যাগত জুম্ম শরণার্থী ও আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তুদের স্ব স্ব জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ র্প্বূক যথাযথ পুনর্বাসন প্রদান করা হয়নি,পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল চাকরিতে পাহাড়িদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়োগ সুনিশ্চিত হয়নি,সেটেলার বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন করা হয়নি এবং সেনা অভিযান, ঘরবাড়ী তল্লাসী, অবৈধ গ্রেপ্তার, বিচার বহিভূর্ত হত্যা, নির্যাতন-নিপীড়ন, হয়রানি, ক্যাম্প সম্প্রসারণ, সন্ত্রাস, হুমকি ইত্যাদি অব্যাহত রয়েছে।


তিনি দাবী করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের বিধান থাকলেও এসব পরিষদে সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ প্রশাসনিক ক্ষমতা ও কার্যাবলী হস্তান্তর না করায় এখনো পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ শাসনব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গড়ে উঠতে পারেনি। এক দশক ধরে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও পরিষদসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। পক্ষান্তরে ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে অনির্বাচিত ব্যক্তিদের মাধ্যমে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পরিচালনার ফলে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ দুর্নীতি, অনিয়ম ও গণ-বিরোধী আখড়ায় পরিণত হয়েছে এবং পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের পরিবর্তে সংকীর্ণ স্বার্থে শাসকগোষ্ঠীর তাবেদারি ও চুক্তি বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।


সন্তু লারমা অভিযোগ করে বলেন, সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলার কর্তৃপক্ষসমূহ পার্বত্য চুক্তি বিরোধী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তাঁরা আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদকে উপেক্ষা করে সাধারণ প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন কার্যক্রম ইত্যাদি পরিচালনা করে চলেছেন। তিন পার্বত্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা না থাকার ফলে এই প্রশাসনব্যবস্থা জুম্ম জনগণসহ পার্বত্যবাসীর উপর এক জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এসব কর্তৃপক্ষ পার্বত্য চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্ম স্বার্থ বিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে চলছে। ফলে জুম্ম জনগণ নিরাপত্তাহীন ও এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে।


ঐক্য ন্যাপের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিবিদ পঙ্কজ ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, ”পাহাড়ের সমস্যা একটি জাতীয় সংকট। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মাধ্যমে এ সংকট উত্তরণ কওে আমরা নোবেল শান্তি পুরস্কারও পেতে পারতাম। কিন্তু আজ চুক্তির বর্ষপূর্তিতে যে ক্রোড় পত্র প্রকাশিত হয় সেখানে শেখ হাসিনার বক্তব্য একরকম আর চুক্তি স্বাক্ষরকারী অপর পক্ষের সন্তু লারমার বক্তব্য অন্যরকম। এটা আমাদের জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক।”


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মেসবাহ কামাল তাঁর বক্তব্যে বলেন, ”পার্বত্য চুক্তি হয়েছে পাহাড়ের জনগণের সাথে রাষ্ট্রের ,কোনো দলের নয়। যে সরকার ক্ষমতায় আসবে সে সরকারকে এ চুক্তির শতভাগ বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিতে হবে।”


প্রতি বছর পার্বত্য চুক্তির বর্ষপূর্তিতে প্রকাশিত ক্রোড়পত্রে মিথ্যাচার হচ্ছে দাবী করে বিশিষ্ট এ আদিবাসী গবেষক বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্রমাগত আদিবাসীদেরকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হচ্ছে। আধুনিক রাষ্ট্র পাহাড়ের যে বৈচিত্র্য রয়েছে সেটাকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছেবলে দাবী করেন তিনি। পাহাড়ে সেনাশাসনের অবসানও দাবী করেন মেসবাহ কামাল ।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত