রাঙামাটির বরকল উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রার্দুভাব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক বছর আগে উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রার্দুভাব একেবারে কমে গেলেও সম্প্রতি সময়ে ম্যালেরিয়া রোগের প্রার্দুভাব বেড়ে যাওয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ঔষধপত্রসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অভাবে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা কাজ করতে না পারায় ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে এনজিও সংস্থাগুলো দাবী করেছে।
বরকল উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আরএইচডিসি এনজিও হিলফ্লাওয়ার ও ব্র্যাক কাজ করছে। এসব সংস্থাদের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত চার মাসে আক্রান্ত পজিটিভ রোগীর সংখ্যা দাড়িঁয়েছে ৫৪০জন। উপজেলার ৫ইউনিয়নের মধ্যে দুর্গম সীমান্তবর্তী বড়হরিণা,ভুষণছড়া ও আইমাছড়া ইউনিয়নের মানুষ বেশী ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তুলনা মূলকভাবে বরকল সদর ও সুভলং ইউনিয়নে এ রোগের আক্রান্ত সংখ্যা একেবারে কম।
উপজেলা বরকল উপসহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার মোঃ আবু সুফিয়ানের জানান- সস্প্রতি পাশের দেশ ভারতের মিজোরাম প্রদেশের মানুষ বেশী ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জেনেছি। তার প্রভাব আমাদের সীমান্তবর্তী ইউনিয়নের মানুষদের উপর পড়ার কারণে উপজেলায় ম্যালেরিয়া রোগের প্রার্দুভাব বাড়ছে বলে প্রাথমিক ধারনা করা হচ্ছে।
উপজেলা ব্র্যাক স্বাস্থ্য বিভাগের ম্যানেজার অলকা চাকমা জানান-তাদের তিনটি ল্যাব সেন্টারে মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত চার মাসে ম্যালেরিয়া পজিটিভ রোগী ৩৯০জন পাওয়া গেছে। তিনি বলেন দুর্গম অঞ্চলের মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন নয়। ব্র্যাক সংস্থার মাঠ পর্যায়ে অনেক কর্মী কাজ করছে। এছাড়াও সংস্থা থেকে মশারোধক ঔষধ মিশ্রিত মশারী দেয়া হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সে মশারী ব্যবহার করছে মাছ ধরার কাজে। কাজেই ঔষধের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মশার উপদ্রব বেড়ে গেলেও ম্যালেরিয়া রোধে ঐ মশারীগুলো কোন কাজে আসছে না।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ (আর এইচডিসি) স্বাস্থ্য বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন ইউএনডিপির অধীনে থাকার সময় ঔষধপত্র,আরডিটি স্লাইড সহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেয়ে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু বর্তমানে সংশ্লিষ্ট উপজেলা হাসপাতালকে কোর্য়াটেম ট্যাবলেট,আরডিটি স্লাইড সহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার জন্য বলা হলেও আমাদের প্রয়োজনের সিকিঁভাগও ঔষধপত্র,স্লাইড দিতে পারছেনা হাসপাতালগুলো। ফলে মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবিকারা এসব অভাবের কারণে সঠিকভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। স্বাস্থ্য সেবা সঠিক ভাবে না পাওয়ার কারণে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে বলে ঐ কর্মকর্তারা মনে করেন।
ম্যালেরিয়ার প্রার্দুভাব বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে রাঙামাটির সিভিল সার্জন মোস্তাফিজুর রহমান জানান প্রতি বছর এসময়ে ম্যালেরিয়া রোগের মাত্রা একটু বাড়ে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এবছর পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রার্দুভাব বাড়ছে। কেন বাড়ছে তা এ মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে এ বাড়ার কারণ কি তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.