একটি সেতুই বদলে দিতে পারে দীঘিনালার মেরুং ও বাঘাইছড়ির রূপকারীর জীবনযাত্রা

Published: 26 Aug 2018   Sunday   

একটি সেতুর অভাবে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ দুটি উপজেলার সববয়সী ও সব শ্রেণী পেশার মানুষ দৈনন্দিন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কখনো কখনো সেই ভোগান্তি প্রাণহানির পর্যায়েও পৌঁছে। সড়ক পথে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার সঙ্গে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। তবে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং বাজারের পাশে মাইনী নদীর ওপর একটি সেতু নির্মিত হলে দূরত্ব অর্ধেক কমে যাবে। এতে দুই উপজেলার যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাবে। এ কারণে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মাইনী নদীর ওপর একটি সেতু।

 

দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের হাজাছড়া এলাকার অবস্থান মাইনী নদীর পূর্ব পাড়ে। বাঘাইছড়ি উপজেলার কাছাকাছি হলেও এই এলাকার মানুষজনকে নানা প্রয়োাজনে দীঘিনালা সদর ও মেরুং বাজারে যেতে হয়। সেতুটি নির্মিত হলে হাজাছড়া ১১টি গ্রামের বাসিন্দারা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। মাইনী নদীর ওপর সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে এই ১২টি গ্রামের মানুষজন এক রকম বিচ্ছিন্ন জীবন-যাপন করেন। ক্ষেতে উৎপাদিত ফসল বিক্রির জন্য এসব গ্রামের বাসিন্দাদের ৪০ কিলোমিটার পথ ঘুরে মেরুং যেতে হয়। তাছাড়া স্কুল-কলেজ-হাটবাজার-হাসপাতালসহ অন্যান্য সরকারী প্রতিষ্ঠান মেরুং এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় ওপারের ১১ গ্রামবাসীর নিত্য দিনের দু:খ যেনে অসহনীয়।

 

ওই এলাকার গ্রামবাসী, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা  জানান হাজাছড়া ছোট হাজাছড়া, চার কিলোমিটার, সুরেশ কার্বারিপাড়া, বীরবাহু হেডম্যানপাড়া, অঙ্গদা মাস্টারপাড়া, বাবুন্যা কার্বারিপাড়া, অনিন্দ কার্বারিপাড়া, নেত্রজয় কার্বারিপাড়া, ছকাবা ছড়া, ধন্যামাছড়া জয়ন্ত কার্বারিপাড়াসহ ১১টি গ্রামের মানুষের একমাত্র দুর্ভোগ যোগাযোগ ব্যবস্থা। নদীর ওপর সেতু না থাকায় গ্রামগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। নদীতে বাঁশের তৈরি সাঁকো পাড়ি দিয়ে মানুষকে বাজারে  যেতে হয়। বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাইনী নদী পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের।

 

এলাকার বাসিন্দারা জানান, নির্বাচন এলে প্রার্থীরা তাদের এ সেতুটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে তাদের দুর্ভোগের খবর আর কেউ রাখেন না। সেতু না থাকায় জমিতে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না তারা। পরিবহনের অজুহাত দেখিয়ে তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত করা হয়। সেতুটি হলে তারা  ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবেন।

 

তারা আরো জানান, গেল ২০ বছর ধরে এই একটি সেতুর ভোগান্তিতে ভুগছেন দীঘিনালার মেরুং ও বাঘাইছড়ি উপজেলার রূপকারী ইউনিয়নের ১৫ হাজারের অধিক পাহাড়ি-বাঙালি অধিবাসী। সরকার যায় সরকার আসলেও কেউই রাখেননি প্রতিশ্রুতি। তবে তারা বারে বারে আশায় বুক বেধে থাকেন সেতুটি নির্মিত হবে শিগগিরই।

 

স্থানীয় ইউপি সদস্য অমিয় চাকমা বলেন, ১১টি গ্রামে কয়েক হাজার পরিবারের বসবাস। এখানে সরকারি, বেসরকারি মিলিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে পাঁচটি। দেড়’শ হেক্টরের মতো চাষাবাদের জমি রয়েছে। একটি সেতু না থাকায় ১২টি গ্রাম অন্ধকারে ডুবে রয়েছে।

 

মেরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রহমান কবির রতন বলেন, মেরুং বাজারের পাশে মাইনী নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হলে শুধু বাঘাইছড়ি উপজেলার সঙ্গে দীঘিনালার যোগাযোগ সহজ হবে না বর্তমানে দীঘিনালা উপজেলার সঙ্গে বাঘাইছড়ির সড়ক দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমে যাবে। সড়কের দুই পাশে বসতি থাকায় মানুষের চলাচলে ঝুঁকিও থাকবে না।

 

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিসদের সদস্য আশুতোষ চাকমা বলেন মাইনী নেদীতে সেতু’র সমস্যা একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এটি নির্মিত হলে এলাকার জীবনমানে ও অর্থনৈতিক স্বালম্বী ফিরে আসবে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত