খাগড়াছড়িতে মাসব্যাপী আম মেলা শুরু হয়েছে

Published: 16 Jun 2018   Saturday   

খাগড়াছড়িতে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকক ও স্থানীয় আম প্রিয় মানুষদের জন্য মাস ব্যাপী আম মেলা শুরু হয়েছে। ব্যতিক্রমধর্মী  এই আম মেলায় রঙ-বেরঙের নানা ঘ্রাণের সুস্বাদু আমের প্রদর্শিত হচ্ছে। 

 

জেলা শহরের পানখাইয়া পাড়ার ঐতিহ্যবাহী বটতলায় বসেছে এই ‘আম মেলা’। ভিন্নধর্মী এই মেলায় ১৫টি বাগানের উৎপাদিত সব আম এক ছাতার নিচে জড়ো করে শুক্রবার শেষ বিকেলে শুরু হয়েছে জমজমাট প্রদর্শনী ও বিকিকিনি। ঈদের ছুটিতে বেড়াতে আসা পর্যটক এবং স্থানীয় আমপ্রিয় মানুষদের কথা চিন্তা করে মাসব্যাপি চলবে এই মেলা।

 

মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী। এসময় খাগড়াছড়ি’র পুলিশ সুপার আলী আহম্মদ খান, জেলা পরিষদ সদস্য মংক্যচিং চৌধুরী, জেলা উদ্যান কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেনসহ বিভিন্ন বাগান মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে  জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খাগড়াছড়ি’র উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের মান ও গুণসম্পন্ন আমকে সারাদেশে ‘ব্র্যান্ড’ পণ্যে উন্নীত করতে রুপরেখা প্রনয়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।  তিনি সৌখিন আমবাগানি মেলা’র উদ্যোক্তাদের হাতে নগদ এক লক্ষ টাকা তুলে দিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী পাহাড়ের বিদ্যুৎ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে দিয়েছেন। পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মহোদয়ের নির্দেশনা আছে। আগামী অর্থ বছরেই খাগড়াছড়িতে স্থাপিত হবে একটি হিমাগার।

 

জানা যায়, এবার খাগড়াছড়িতে আমের ফলনও হয়েছে প্রচুর। কয়েক দশক ধরে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ পাহাড়ের সুমিষ্ট ‘আ¤্রপালি’র কথাই জেনে এসেছেন। এবার তাতে যোগ হয়েছে রঙ-বেরঙের নানা ঘ্রাণের সুস্বাদু সব বাহারি নামের পাহাড়ি আম। কোনটার রঙ সবুজাভ, কোনটা লালচে, কোনটা মরিচ রঙা আবার কোনটা ধূসর বৈকি। অবিশ^াস্য হলেও সত্য ‘ব্রুনাই কিং’ জাতের একেকটি আমের ওজন গড়ে দুই কেজি’র ওপরে। ‘কুমিল্লা’ জাতের আমও একেকটি গড়ে আধা কেজি’র ওপরে।

 

আর সারাদেশের মতো ‘হিমসাগর’, ‘মাহালিশা’, ‘কাঁচামিঠা’, ‘মল্লিকা’র কথা না হয় বাদই দিলাম। স্থানীয় জাতের অসংখ্য আমও এবার বাজারজাত করছেন জেলার আম বাগানিরা।

 

 

বেসরকারি পর্যায়ে খাগড়াছড়ি’র প্রধানতম জনপ্রিয় ও বিলাসবহুল আবাসিক ‘হোটেল গাইরিং’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস. অনন্ত ত্রিপুরা জানান, পবিত্র ঈদ উৎসবের সাথে এবারের আম মেলা এবং আগাম বর্ষা খাগড়াছড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে অন্যরকম ফুটিয়ে তুলেছে। পথে-ঘাটে টুকটাক পাহাড় ধ্বসের শংকা থাকলেও সওজ’র তৎপরতায় তা বেশি সময় থাকে না। তাই বর্ষায় পাহাড়ের প্রকৃতি উপভোগে আসা ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য আমরা দেবো সর্বোচ্চ ছাড়।

 

শহরের প্রাণকেন্দ্র মিলনপুরে অবস্থিত এই হোটেলে স্বল্প খরচে খাবারের পাশাপাশি রয়েছে ছাত্র-যুবকদের জন্য ডরমেটরি টাইপের থাকার ব্যবস্থাও।

 

জেলা শহরের মহাজন পাড়ায় অবস্থিত ভিন্নধর্মী খাবারের দোকান ‘রাইন্যা টুগুন’-এর পরিচালক লোকজ্যোতি চাকমা বলেন, স্থানীয় বাজারে এখন প্রচুর পরিমাণে ছোট-বড়ো মাছ সহজলভ্য। শাক-সবজি’র সাথে গ্রামে পালন করা হাঁস-মুরগি-কবুতরের দামও সহনীয়। তাই যাঁরাই বেড়াতে আসবেন, স্বস্তি পাবেন সীমিত বাজেটের মধ্যেই।

 

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো: রাশেদুল ইসলাম নিজেও একজন প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপ্রিয়। তিনি খাগড়াছড়িতে যোগ দেয়ার পর থেকেই মনোযোগ দেন পাহাড়চূড়া ‘আলুটিলা’র দিকে। তাঁর উদ্যোগে আমূল বদলে গেছে আলুটিলা পর্যটন স্পট। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা আর সান্ধ্যকালীন সোলারের আলোয় উদ্ভাসিত আলুটিলায় আপনি সময় কাটাতে পারবেন সন্ধ্যা অবধি।

 

তিনি জানান, পরিবহন খাতে ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু অসঙ্গতি এখনো কাটিয়ে উঠা যায়নি। তবু বলবো, যাঁরাই খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসবেন, তাঁরা ঠকবেন না। অন্তত: স্বল্প খরচে যাতে পর্যটকরা শ্রান্তি বিনোদন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সব সময় তৎপর। 

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত