ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সন্তু গ্রুপ পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল অশান্তির জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করে বলেছে সন্তু লারমা চলমান ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের জনক ও পৃষ্টপোষক। এ সংঘাতের কারণে আজ পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুর জন্য একমাত্র তিনিই দায়ী। এ কারণে সন্তু গ্রুপের বিরুদ্ধে বহু মানুষের ন্যায্য ক্ষোভ রয়েছে। সোমবার রাঙামাটি শহরে আঞ্চলিক পরিষদের সামনে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনার সাথে ইউপিডিএফ জড়িত বলে জনসংহতি সমিতির সন্তু গ্রুপের অভিযোগকে পাগলের প্রলাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বুধবার ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এসব অভিেযাগ করা হয়েছে। প্রেস বার্তায় অভিযোগ করে বলা হয়, আঞ্চলিক পরিষদের সামনে বোমা বিষ্ফোরণের ঘটনার পর পরই সন্তু গ্রুপ যেভাবে ইউপিডিএফ নিষিদ্ধের জিগির তুলছে, তাতে প্রমাণ হয় এই দাবির পক্ষে সমর্থন খাড়া করার জন্যই তারা নিজেরাই অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে। হামলার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক সুশীল চাকমাকে ইউপিডিএফের সদস্য প্রমাণ করতে সন্তু গ্রুপ মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায়, কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়ে এখন তারা নানা উদ্ভট কল্পকাহিনী প্রচার করে বেড়াচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। প্রেস বার্তায়, সুশীল চাকমাকে সন্তু গ্রুপের একজন একনিষ্ট সমর্থক দাবি করে আরও বলা হয়, সুশীল চাকমা বর্তমানে রাঙামাটি শহরের কল্যাণপুরে পরিবারসহ বসবাস করলেও তার আদি নিবাস হল নানিয়াচরের কৃঞ্চমাছড়া এলাকার মাইসছড়িতে (হুক্যামাজুরি)। গত জানুয়ারীর শেষ সপ্তাহ থেকে প্রায় ৬ মাস সেখানে সন্তু গ্রুপের সাথে অবস্থানকালে তার পিতা বাসুলাল চাকমা ছিলেন তাদের অন্যতম পৃষ্টপোষক। এছাড়া সুশীল চাকমাকে বহুবার সন্তু গ্রুপের মিছিল মিটিঙে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। বোমা বিষ্ফোরণ ঘটনার সাথে ইউপিডিএফকে জড়িত করে সন্তু গ্রুপের দেয়া বিবৃতিকে দুঃখজনক, অসৎ-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও নিন্দনীয় আখ্যায়িত করে প্রেস বার্তায় বলা হয়, সোমবারের গ্রেনেড বিষ্ফোরণ ঘটনাকে ‘জজ মিঞা নাটকের’ অনুরূপ সংস্করণ কিনা সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ যেখানে জেলা প্রশাসন কার্যালয়,সেনা ব্রিগেড অফিসসহ সামরিক-বেসামরিক সংস্থার মত গুরুত্বপূর্ণ সদর দপ্তর রয়েছে এবং যেখানে দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা পুলিশী প্রহরার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে বাইরের কারো পক্ষে হামলা চালিয়ে নিরাপদে সরে আসা কখনোই সম্ভব হতে পারে না। প্রেস বার্তায় দাবি করা হয়, গত সংসদ নির্বাচনে বন্দুকের ভয় দেখিয়ে লোকজনকে সন্তু গ্রুপের প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করা এবং বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের খুন, অপহরণ ও নির্যাতনের কারণে সন্তু গ্রুপের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ভীষণ ক্ষোভ রয়েছে। সন্তু গ্রুপের বিরুদ্ধে সেটলারদের উগ্রসাম্প্রদায়িক অংশটির ক্ষোভ এত গভীরে বিস্তৃত যে, তারা একবার আঞ্চলিক পরিষদের অফিসে হামলা চালিয়েছিল। এমনকি বার বার চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনের হুমকী দেয়ার পরও গত ১৭ বছরে প্রকৃতপক্ষে আন্দোলনের কোন কর্মসূচী গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায় এবং দলের অভ্যন্তরে চরম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও একনায়কতন্ত্র বিরাজ করায় খোদ সন্তু গ্রুপের সাধারণ কর্মী মহলে ব্যাপক হতাশা, ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। আঞ্চলিক পরিষদের সামনে বোমা বিষ্ফোরণ এই হতাশা ও ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ হতে পারে বলে দাবি করা হয় প্রেস বার্তায়। প্রেস বার্তায় উক্ত বোমা বিষ্ফোরণ ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত পূর্বক প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানানো হয়েছে।
–হিলবিডি২৪/সিআর.