বিলাইছড়িতে বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু ফসল ভালো না হওয়ায় হতাশ কৃষকরা রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলাতে বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু করেছে কৃষকরা। ব্লাস্ট রোগের কারণে ফসল ভালো না হওয়ায় হতাশ এখানকার কৃষকরা।
জানা যায়, বিলাইছড়ি উপজেলার সব ধান চাষের জমিই জলে ভাসা জমি। তাই বছরে শুধু বোরো মৌসুমতাই এখানে চাষ করা হয়ে থাকে। এই বছর কাপ্তাই হ্রদের পানি একটু দেরিতে কমার কারণে ধান রোপন করতেও দেরি হয়েছে এখানকার কৃষকদের। তাই একটু দেরিতে ধান পাকা শুরু হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এই বছর বিলাইছড়ি উপজেলায় মোট ২৭০ হেক্টর জমিতে বোরো মৌসুমে ধান চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে উফসী ফসল ২০২ হেক্টর এবং হাইব্রীড ৬৮ হেক্টর ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকের মুখে হাসি থাকার পরিবর্তে হতাশের চিত্র ফুটে উঠেছে। কারণ ব্লাস্ট রোগের কারণে প্রায় সবার জমিতেই মরা ধানের শীষ দেখা গেছে। তার উপর পরপর কাল বৈশাখীর ঝড়ে কাঁচা এবং পাকা ধানগুলো হেলে পড়েছে। তাই কৃষকদের মুখে পাকা ধান কাটার আনন্দটা হতাশায় মলিন হয়ে গেছে।
১ নং বিলাইছড়ি ইউনিয়নের ধুপ্যাচর গ্রামের কৃষক চিত্তিসোনা চাকমার সাথে ধান কাটার সময় কথা হলে তিনি জানান, এই বছর তিনি অন্যের ১২০ শতক মত জমিতে বর্গা নিয়ে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু দেখেন একদিকে মরা ধানের শীষ এবং অন্যদিকে উপর্যুপরি কাল বৈশাখী ঝড়ে পাকা এবং কাঁচা ধানগুলো কেমনে হেলে পড়ে আছে। আগে থেকে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়েছে কিনা? প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান কীটনাশক প্রয়োগ করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
একই গ্রামের সরকারি চাকুরিজীবী বসন্ত কুমার চাকমার সাথে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের সময় দেখা হলে তিনি জানান, তিনি তার নিজের প্রায় ৩২০ শতকের মত জমিতে ধান চাষ করেছেন। তার ধানগাছগুলোর কেবল শীষ বের হয়েছে। তার ধান গাছ গুলোতেও মাঝে মাঝে মরা শীষ এবং হেলে পরার দৃশ্য দেখা গেছে। তাই তিনি আগে থেকে কৃষি বিভাগের পরামর্শে ব্রিফার ৫জি, মিপসিন ও এমিস্টার টপ কীটনাশক ব্যবহার করতেছেন। তিনিও এই বছর ফসল নিয়ে চিন্তায় আছেন।
একি ইউনিয়নের দীঘলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা রুপা তঞ্চঙ্গ্যার সাথে ধান কাটার সময় সরেজমিনে কথা হলে তিনি বলেন, তিনি ৮০ শতক জমিতে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু ব্লাস্ট রোগের কারণে তিনিও হতাশার কথা জানালেন। তিনি আরো বলেন হঠাৎ করে এই রোগ দেখা দেয় তাই কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোন লাভ পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা অনুময় চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্লাস্ট রোগটি এখন সারা বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে। তাৎক্ষনিকভাবে রোগটি একবার দেখা দিলে পরে কীটনাশক দিলেও কোন কাজ হয়না। তাই আমরা প্রতিরোধ হিসেবে বিভিন্ন ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি। কোন কোন কৃষক কিছুটা হলেও উপকার পাচ্ছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.