বুধবার রাঙামাটিতে মারমা সম্প্রদায়ের কেন্দ্রীয়ভাবে ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই কেলি উৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংক্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু-সাংক্রান উৎসবকে কেন্দ্র করে মারমা জনগোষ্ঠীরা পুরাতন বছরের সমস্ত গ্লানি, দুঃখ, অপশক্তিকে দূর করে ধুয়ে মুছে দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে এই সাংক্রাই জলকেলি উৎসবে মেতে উঠেন।
মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থা(মাসস) এর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তিস্থ নারিকেল বাগান সাংক্রাই জলকেলি উৎসবের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসু প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ ফিরোজা বেগম চিনু, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুখ, ডিজিএফ এর রাঙামাটি কমান্ডার কর্নেল শামসুল আলম, রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার লেঃকর্নেল রেদওয়ান আহমেদ, রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশীদ, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর কবির, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য মোঃ মুছা মাতব্বর। স্বাগত বক্তব্যে রাখেন সাংক্রাই জলকেলি উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক উবাচিং মারমা।
আলোচনা সভা শেষে ঐতিহ্যবাহী মং (ঘন্টা) বাজিয়ে ও ফিতা কেটে উৎসবের উদ্বোধন করেন দীপংকর তালুকদার। এরপর শুরু হয় মারমা সম্প্রদায়ের যুবক-যুবতীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে একে অপরকে জল ছিটিয়ে জলকেলি উৎসবে মেতে উঠেন। জলকেলি উৎসবের পাশাপাশি চলে মনোজ্ঞ সম্প্রীতির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সমবেত হয় দূর-দুরান্ত থেকে আগত পর্যটক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের হাজারো নারী-পুরুষ। দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানটি যেনো পাহাড়ি-বাঙালীর মিলন মেলায় পরিণত হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফিরোজা বেগম চিনু এমপি বলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে নানান সম্প্রদায় এই মৈত্রীময় জল উৎসবে যোগদান করে থাকেন। তিলি সকল সাম্প্রদায়িক শক্তিকে বিনষ্ট করে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে বাংলাদেশকে উন্নতি দিকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেন, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই জল উৎসবটিতে সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সেই সাথে কিছুটা ধর্মীয় অনুভূতি রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু একটি গোষ্ঠী অধিকারের দাবীর নামে ধর্মীয় ও সম্প্রদায়কে পূজি করে বাংলাদেশের সর্বোভৌমত্ব বিরোধীতা করবে তার সমর্থন আমরা করি না। এ অঞ্চলের সাংক্রাই মানে শান্তির বারোটা। তাই যারা অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে জনজীবনকে বিপন্ন করছে তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে একসাথে অভিন্ন সুরে কথা বলতে হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.