২৯ বছর পূর্বে নির্মিত ৪টি সাধারণ মানের বেইলী ব্রিজ এতই ঝুকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে যে তার কারণে যে কোন সময় ব্রিজগুলো ভেঙ্গে পড়ে লামা ও আলীকদম উপজেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ৪৩.৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘের ফাঁসিয়াখালী-লামা-আলীকদম সড়কটিতে তিনটি খাল ও মাতামূহুরীর উপর মোট ৪টি সাধারণ মানের বেইলী ব্রিজ রয়েছে।
ব্রিজ গুলো খুব বেশী ঝুকি পূর্ণ হয়ে পড়ায় বান্দরবান সড়ক ও জনপদ বিভাগ ৫ টনের অতিরিক্ত মালবোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল নিষেধ উল্ল্যেখ করে ব্রিজের গোড়ায় দু`বছর পূর্ব থেকে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তদরকী না থাকায় এ নির্দেশনা কেউ শুনছে না।
গেল ১০ এপ্রিল লামা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেইলী ব্রিজ গুলোর উপর দিয়ে ৫ টনের অধিক ওজনের তামাক পাতাসহ বিভিন্ন পণ্য পরিবহন না করার জন্য উপজেলার সকল তামাক কোম্পানীদের উপজেলা সহকারী(কমিশনার) ভূমি,লামা`র মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে জান্নাত রুমী। তিনি আরো বলেন, বিষয়টি দ্রুত কি ভাবে সমাধান করা যায় সে জন্য আমরা জরুরী পদক্ষেপ নেবো।
সড়ক ও জনপদ বিভাগ বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সজীব আহম্মদ বলেন, বান্দরবানের বৃহত্তর লামা ও আলীকদম উপজেলার সাথে একমাত্র সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যম হলো ফাঁসিয়াখালী-লামা-আলীকদম সড়কটি। এ সড়টি ১৯৮৯ সালে উদ্ধোধন করা হয়। ৪৩.৫০ কিলোমিটার সড়কটিতে আলীকদম উপজেলার অংশে মাতামূহুরী নদীর উপর ১টি ও চৈক্ষ্যং খালের উপর ১টি এবং লামা উপজেলার অংশে কুমারী খালের উপর ১টি, ইয়াংচা খালের উপর ১টিসহ সাধারণ মানের ৪টি বেইলী ব্রিজ রয়েছে। এ ব্রিজ গুলো খুব ঝুকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বেইলী ব্রিজের উপর কোন রকম ভারী যানচলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। তার কারণে আমরা বেইলী ব্রিজের গোড়ায় ৫ টনের অধিক ওজনের কোন ধরণের যান চলাচল না করার জন্য নোটিশের মাধ্যমে সাইন বোর্ড জারি করে দিয়েছি। ব্রিজ গুলো দ্রুত ভেঙ্গে পাঁকা ব্রিজে রুপান্তর করার জন্য আমার উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অফিসিয়াল পত্র দিয়েছি।
এ সড়কের এক যাত্রীবাহী বাসের প্রবীণ ড্রাইভার মোঃ নুর ইসলাম সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, যাত্রী নিয়ে যখন এ সড়কের ইয়াংছা ও কুমারী বেইলী ব্রিজের উপর দিয়ে যখন গাড়ীটি পাড় করি তখন ব্রিজটি কেপে উঠে। তখন আমি(ড্রাইভার)সহ সকল যাত্রীরা আতংকে কেঁপে উঠে।
উপজেলা সহকারী(কমিশনার) ভূমি, লামা মোঃ সায়েদ ইকবাল বলেন, উপজেলার সাথে একমাত্র সড়কটির লামার অংশের ইয়াংছা ও কুমারীর বেইলী ব্রিজ দু`টি খুব ঝুকিপিূর্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ এ ব্যাপারে নোটিশও দিয়ে রেখেছে। বর্তমানে লামা ও আলীকদম উপজেলায় তামাক বেচা কেনা শুরু হয়ে গেছে। এ তামাক পাতা গুলো বড় বড় ট্রাকে করে ২০ থেকে ২৫ টন ওজন করে ট্রাকে ভরে প্রতি বছর এ বেইলী ব্রিজের উপর দিয়ে তামাক কোম্পানী গুলো নিয়ে যায়। তার কারনে, এ ব্রিজ গুলো দূর্বল হয়ে পড়েছে। এ বছর যাতে ৫ টনের অধিক ওজনের যে কোন পন্য নিয়ে পরিবহন করতে না পারে সে জন্য গেল ১০ এপ্রিল তামাক কোম্পানীদের নিষেধ করে দিয়েছি। ৫ টনের অধিক ওজনের পন্য পরিবহন করলেই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কালাম বলেন, আলীকদম ও লামা উপজেলার যোগাযোগের এক মাত্র মাধ্যম এ সড়কটি। এ দু` উপজেলা আভ্যন্তরীণ সড়ক গুলোর জন্য শতকোটি টাকার ব্যয়ে প্রায় ৫০টির অধিক ছোট-বড় ব্রিজ নির্মান করেছে সরকার। কিন্তু এ সড়কটি খুব গুরুত্ব পূর্ণ সড়ক। আলীকদমে সেনাবাহিনীর দু`টি ব্রিগ্রেডের কার্যক্রম এবং আলীকদমে বিজিবি`র জোন ও লামায় আনসারের জোনের কার্যক্রম রয়েছে। পাশাোশি আলীকদম থেকে জেলার থানচি উপজেলার গাড়ী যোগাযোগ চালু রয়েছে।
এ ছাড়া এ দু`উপজেলার প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ বসবাস করে। এ কারণে জরুরী ভিত্তিতে এ সড়কের চারটি বেইলী ব্রিজ পাকা করা জরুরী প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। যদি না হয় যে কোন সময় ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ে দু`উপজেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.