খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা বলেছেন, গুচ্ছগ্রামের কার্ডধারীদের অর্থ আত্মসাতের কাল্পনিক অভিযোগ তুলে ওয়াদুদ ভুইয়া নতুন করে রাজনীতির মাঠ গরম করতে চাইছেন। বিগত ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত ঐতিহাসিক ‘শান্তিচুক্তি’র সময়ও তিনিসহ (ওয়াদুদ) তাঁর নেতারা বলেছিলেন, শান্তি চুক্তি হলে এখানে কোন বাঙ্গালী থাকতে পারবে না, কোন বাঙ্গালীর পায়ের নীচে মাটি থাকবে না। অথচ আজ পাহাড়ে সব সম্প্রদায়ের শান্তিতে-সহাবস্থানের সাথে টিকে আছেন এবং স্বস্তিতে আছেন। বৃহস্পতিবার সকালে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন। সমাবেশটিতে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি’র উল্লেখযোগ্য নেতারা আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুভাষ চাকমার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাটিরাঙ্গা পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মো: বাবুল হোসেন। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাহেদুল আলম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি মো: শামছুল হক, মাটিরাঙ্গা পৌর আওয়ামলীগের সভাপতি এমএম জাহাঙ্গীর আলম, খাগড়াছড়ি জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি এ্যাড. জ্ঞানজ্যোতি চাকমা, সাধারণ সম্পাদক মো: মফিজুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো: আবদুল হান্নান লিটন প্রমূখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা আরো বলেন, দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে চলা সংঘাতকে দুর করে শেখ হাসিনাই ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তিচুক্তি’র মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর ওয়াদুদ ভূইয়া’রা মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে সস্তা জনসমর্থন আদায়ের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি ওয়াদুদ ভূইয়া’র প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন কি আপনিসহ বিএনপির নেতারা ফেনী-কুমিল্লায় রাজনীতি করেন? নাকি আকাশ দিয়ে চলেন? বিশেষ অতিথি‘র বক্তব্যে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাহেদুল আলম বিএনপির কড়া সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি কখনোই জনগণের মঙ্গল চায়নি। তারা জামায়াত-শিবিরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে দেশ থেকে মুক্তিযদ্ধের চেতনাকে শেষ করতে চেয়েছে। দেশের জনগনের সমর্থন হারিয়ে আজ তারাই শেষ হতে চলেছে। তিনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের যোগদানকারীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, তাদের যোগদানের মধ্য দিয়ে বিএনপিতে ভাঙ্গনের সুর বেজে উঠেছে। ওয়াদুদ ভুইয়া কোন ভাবেই এ ভাঙ্গন ঠেকাতে পারবেনা। সমাবেশে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো: ইমরান হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী স্বেচ্ছাসেবক লীগের, যোগদানকারী মো: আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। এর আগে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামলীগের সহ-সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা ও বিশেষ অতিথি খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাহেদুল আলমসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দের হাতে ফুলে ফুলে সাজানো নৌকা প্রতীক তুলে দিয়ে মাটিরাঙ্গা পৌর কৃষক দলের সভাপতি মো: আবুল হাশেম এর নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের দুই শতাধিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা জাতীয় পার্টি’র সাবেক সভাপতি মো: নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি’র শতাধিক নেতাকর্মী আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। এসময় সমাবেশে উপস্থিত হাজার হাজার নেতাকর্মী শ্লোগানে শ্লোগানে দলে আগতদের বরণ করে নেয়। সমাবেশ শেষ কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে মাটিরাঙ্গা পৌর সদরে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামলীগের সহ-সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চাইথোঅং মারমা ও বিশেষ অতিথি খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাহেদুল আলমসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে মাটিরাঙ্গা পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলের বাবুল আহামেদ সভাপতি আসাদুজ্জামান কে সাধারন সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিস্ট কমিটি ঘোষনা করেন।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.