লেখক ও উদ্ভাবক আলীকদম থানার ওসি রফিক উল্লাহ

Published: 25 Feb 2018   Sunday   

রফিক উল্লাহ্, একজন পুলিশ কর্মকর্তা। যিনি মাঠ পর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার কঠিন নিগড়ে ব্যস্তসময় পার করেও গড়ে তুলেছেন মননশীলতার আলাদা এক ভূবন। তিনি একাধারে একজন লেখক এবং উদ্ভাবক। এ পর্যন্ত তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫টি। সম্প্রতি তিনি উদ্ভাবন করেছেন আধুনিক ‘ডাব কাটার যন্ত্র’।

 

লেখক রফিক উল্লাহ্ কর্মজীবনে দায়িত্বশীলতার পাশাপাশি লেখন শৈলীতে তাঁর গভীর ধীশক্তি ও অনুসন্ধিৎসু মনের স্ফুরণ ঘটিয়েছেন। নানা বিষয়কে বৈচিত্র্যময় রূপকল্পে এঁকেছেন কলমের আঁছড়ে। লেখনীর পাশাপাশি মনের ভাবকে তিনি অনায়াসে প্রকাশ করতে পারেন বক্তৃতার মাধ্যমেও। নানান বিষয়ের ওপর বক্তব্যে তিনি যুক্তি ও উপমার ব্যবহার করেন সাবলীলভাবেই। বর্তমানে রফিক উল্লাহ্ বান্দরবানের আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ক্যাডেট সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে রফিক উল্লাহ্ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ পান। ১৯৯৫ সালে তিনি শিক্ষানবিশ সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে ঝিনাইদহ জেলায় যোগ দেন। এর আগে তিনি সারদা পুলিশ একাডেমিতে একবছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। চাকুরী জীবনের শুরু থেকেই মেধাবী এ পুলিশ কর্মকর্তা তাঁর কর্মপরিধির মধ্যে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ২০০৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি ‘পুলিশ পরিদর্শক’ হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। কর্মমুখী শিক্ষা বিস্তার এবং কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করায় তিনি ইতোমধ্যে এসএম আহসান মেমোরিয়াল এ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন।


ওসি রফিক উল্লাহ্ সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সমাজ ও দেশমাতৃকার কল্যাণধর্মী লেখনীতে আত্মনিয়োগ করেছেন। ২০১২ সাল থেকে চলতি বছরে তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫টি। ২০১২ সালে তার প্রথম প্রকাশিত বই ‘ম্যানারিজম’। বইটিতে ২৫টি অনুচ্ছেদে ব্যক্তি-পরিবার-সমাজ-সভ্যতার মৌলিক কিছু বিষয় তিনি আলোকপাত করেছেন সাবলীল বর্ণনায়। এ বইয়ের শেষ কথায় তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, ‘পরিবেশকে সুন্দর, স্বাভাবিক ও নান্দনিক রাখার জন্য মনের ইচ্ছা শক্তি থাকা চাই। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য নিজেই সচেষ্ট হতে হবে। পরিবেশ সুন্দর হলে মনে আনন্দময় অনুভূতি জাগে’। ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় বই ‘কর্মমূখী শিক্ষা’। ২০১৬ সালে প্রকাশ করেন কক্্রবাজার ভ্রমণ গাইড ‘কুদুর গুহা’। ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় মৌলিক রচনা সম্ভার নিয়ে ‘চলমান অপরাধ’। এ ধারাবাহিকতায় মহান একুশে বইমেলা ২০১৮-এ প্রকাশিত হয় তাঁর পঞ্চম বই ‘ব্যবসায় সফলতা’।


ওসি রফিক উল্লাহ্ লেখালেখির পাশাপাশি উদ্ভাবনী সক্ষমতা দেখিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি নিজস্ব ধারণায় স্থানীয় ওয়াক্সসপ থেকে তৈরী করেছেন ডাব কাটার একটি যন্ত্র। যন্ত্রটি আবিস্কারের পর ওসি রফিক উল্লাহ্ বলেন, ‘ডাব সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। ডাব কাটার জন্য বাংলাদেশে ভালো কোনো যন্ত্র নেই। এর জন্য আমি ডাব কাটার এই যন্ত্রটি আবিস্কার করেছি।


লেখক রফিক উল্লাহ্’র জন্ম কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শামলাপুর গ্রামে। তার পিতার নাম হাজী সিরাজুল হক ও মাতার নাম আমেনা খাতুন। কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশের পর চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি ও চট্টগ্রাম কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন লাভ করেন।

 

আলীকদম প্রেসক্লাবের সভাপতি মমতাজ উদ্দীন আহাম্মেদ বলেন, গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে পুলিশ পরিদর্শক রফিক উল্লাহ্ নিজের মেধা ও মননের একটি অনন্য জগৎ গড়ে তুলেছেন। তার প্রকাশিত বইগুলোতে বিষয়ভিত্তিক লেখনীতে তিনি তীক্ষè ধীশক্তির পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর প্রকাশিত বইগুলো সাধারণ পাঠক ছাড়াও স্কুলের পাঠ্য সূচীর আওতায় আনলে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে বলে আমার বিশ্বাস।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত