আলীকদমে কৃষি পণ্য রপ্তানিতে ট্যাক্সে নানান ভোগান্তিতে কৃষকরা উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে!

Published: 30 Aug 2017   Wednesday   

বানদরবানের লামা-আলীকদমসহ পার্বত্যাঞ্চলের সবজি বৈদেশিক মুদ্রার্জনে ভূমিকা রাখছে। । দেশে ধারাবাহিকভাবে কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয় বাড়ছে। তবে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিতে ট্যাক্সের নানান ভোগান্তির কারণে কৃষকরা উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছে।

 

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, পার্বত্যাঞ্চলের পাহাড়ি ঢালু জমি মৌসুমি সবজি চাষের উর্বর ক্ষেত্র। এখানে বিষমুক্ত ও ক্যামিকেল বিহীন সবজি চাষ সম্ভব। দেশের আর কোথাও এই ধরণের প্রাকৃতিক উপযোগিতা ও অনুকুল সুযোগ কম রয়েছে। এসব সম্ভাবনার কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাহাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষে অনেকে বিনিয়োগে উৎসাহি হচ্ছেন।

 

স্থানীয় বিনিয়োগকারী মন্জুর আলম জানান, তিনি সম্পূর্ন অর্গানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে এখানে পেপে চাষ করেন। তার এসব পেপে বিদেশে সরবরাহের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। কিন্তু স্থানীয়ভাবে ট্যাক্স বিড়ম্বনায় তিনি এ চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। 

 

তিনি আরো জানান,পেপেসহ আরো কয়েকটি বিদেশে রপ্তানিযোগ্য কৃষি ফসল এখানে উৎপাদনের ভালো পরিবেশ রয়েছে। পরিবহনকালে ট্যাক্স আদায়ে হয়রানি, সড়ক মহাসড়কে টুল/ ট্যাক্স আদায়ে হয়রানির কারণে তিনি ৩/৮ লাখ টাকা লোকসান দিয়ে এ ব্যবসা থেকে সরে যান। তার মতে এসব বন্ধ হলে পার্বত্যা এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিভিন্ন দেশে বাজারজাত করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

 

জানা যায়, দেশের রপ্তানি আয় ২০২১ সালের মধ্যে ৬ হাজার কোটি ডলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে রপ্তানি নীতি ২০১৫-২০১৮ এর অনুমোদন দিয়েছে সরকারের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রস্তাবিত রপ্তানি নীতিতে রপ্তানিকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্রদান, সহজ ও স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরকে আধুনিকায়নসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে ‘নতুন এই রফতানি নীতি চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকেই কার্যকর বলে বিবেচিত হবে’। প্রস্তাবিত রপ্তানি নীতিতে যে সাতটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কৃষিজাত পণ্য ও ভেষজ সামগ্রী রয়েছে।

 

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যানুযায়ী, গেল ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল, ৬০ কোটি ৮০ লাখ। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার পরে এই লক্ষমাত্রা অতিক্রম করেছে। এসব পণ্যের উপর টুল/ ট্যাক্স আদায়ে নিয়ম মেনে সহায়তা করা হলে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দ্বিগুন লক্ষ্যার্জিত হবে বলে মনে করেন সংশিষ্ট বিনিয়োগকারীরা।

 

কৃষিবিদদের মতে পার্বত্য এলাকার উর্বর মাটি সব চাষের অনুকুল পরিবেশ রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা-প্লাবনে নিমজ্জিত হয়ে মৌসুমী চাষে ব্যঘাত সৃষ্টি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পার্বত্য পাহাড়ি ঢালু ভুমি প্লাবিত হয় না এবং সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক নিরাপত্তা ও যোগাযোগের সূচকও বৃদ্ধি পেয়েছে। সূতরাং চাষের নিরাপদ পরিবেশ থাকলেও বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হারাচ্ছেন টুল/ ট্যাক্স আদায়ের অনিয়মের কারণে ।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত