ভারী বর্ষনের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপ বাড়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে কাপ্তাই বাঁধের সবক’টি স্পিলওয়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৬টি স্পিলওয়ে দিয়ে সেকেন্ডে ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে ছাড়ছে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, কয়েক দিন ভারী বর্ষনের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বাধের চাপ সামাল দিতে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১৬টি স্পিলওয়ে ৬ ইঞ্চি করে খোলা ছিল। এতেও সামাল দিতে না পারায় শনিবার সকালে স্পিলওয়ের পরিধি বাড়িয়ে দুই ফুট করা হয়। বিকেল নাগাদ কাপ্তাই লেকের পানির স্তর অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যা ৬টায় বাঁধ রক্ষায় ঝুঁকি এড়াতে ১৬টি স্পিলওয়ের পরিধি বাড়িয়ে তিন ফুট খুলে দেয়া হয়।
সাম্প্রতিককালে কর্তৃপক্ষ স্পিলওয়ে দিয়ে যে কয়েকবার পানি ছেড়েছে তৎমধ্যে এবারেই সর্বোচ্চ বলে কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সুত্র জানায়। পাশাপাশি কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪টি ইউনিট চালু রেখে টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে আরো ২৪ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে সর্বোচ্চ ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ১৬টি স্পিলওয়ে ও ৪টি টারবাইনের মাধ্যমে একসাথে সেকেন্ডে ৮২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে পড়ছে।
এদিকে ভাটি অঞ্চল রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়িঘর ডুবে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মে এই সময় কাপ্তাই হ্রদে ৯২.৫২ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) পানি থাকার কথা থাকলেও গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত পানি রয়েছে ১০৭.৬৭ এমএসএল। কাপ্তাই বাঁধের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে হ্রদে ১৫.১৫ ফুট পানি বেশি রয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে উজান থেকে ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। বাড়তি পানির চাপ সামলাতে ১৬টি গেইট একসাথে খুলে দেওয়া হয়। তবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট একসাথে চালু থাকলে এতো পানি ছাড়ার প্রয়োজন হতোনা। তখন ইউনিটের জেনারেটরের মাধ্যমে পানি ছাড়া হতো সেকেন্ডে ৩৪ হাজার কিউসেক। ১টি ইউনিট নষ্ট থাকায় এখন চালু আছে ৪টি।
কর্ণফুলি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক শফি উদ্দিন আহমেদ ১৬টি স্পিলওয়ে দিয়ে ৫৮ হাজার ও ৪টি টারবাইনের মাধ্যমে ২৪ হাজারসহ সেকেন্ডে একসাথে ৮২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে ফেলা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, ২৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪টি ইউনিটে গড়ে সর্বোচ্চ ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে গেলেও উজান থেকে আসা পানির চাপ কমানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে স্পিলওয়ে দিয়ে পানি ছাড়ার প্রয়োজন হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.