রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠায় সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে

Published: 24 Jul 2017   Monday   
রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের খামার পাড়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া স্থান। ছবি হিলবিডি২৪ ডটকম।

রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের খামার পাড়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া স্থান। ছবি হিলবিডি২৪ ডটকম।

গেল কয়েক দিনে টানা ভারী বর্ষনের কারণে রাঙামাটি শহরে ঝুকিপূর্ন স্থানে বসবাসকারীরা আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন। ঝুকিপূর্ন স্থান থেকে সরে যেতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিংএর অব্যাহত রয়েছে।

 

অপরদিকে,রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের শাল বাগান এলাকায় অস্থায়ীভাবে নির্মিত বিশেষ ব্যবস্থায় সড়কটি টানা বর্ষনে ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠায় শুধুমাত্র সিএনজি,এম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে। প্রায় ২৫ মিটার রাস্তা বৃষ্টির পানিতে সম্পূর্নভাবে ভেঙ্গে যাওয়ায় রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।


জানা গেছে, টানা ভারী বর্ষনে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ন অবস্থায় বসবাসকারী লোকজন জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। সোমবার বিকাল পর্ষন্ত ৫৪ জন নারী-পুরুষ ও শিশু আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। টানা বর্ষন অব্যাহত থাকায় রাঙামাটি শহরের পাহাড়ে পাদ দেশে ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে নিয়মিত মাইকিং করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।


প্রসঙ্গতঃ গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের আশ্রয়ের জন্য রাঙামাটি শহরের ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র কমিয়ে বর্তমানে ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বর্তমানে ১ হাজার ৩৪২জন নারী-পুরুষ ও শিশু রয়েছে।


রাঙামাটির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, ঝুকিপূর্ন এলাকা বসবাসরতদের জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য রাঙামাটি শহরে মাইকিং অব্যাহতভাবে চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে অর্ধ শতাধিক নারী-পুরুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহন করেছেন এবং এই আশ্রয় গ্রহনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। তাদের সকাল-বিকাল খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


এদিকে,শনিবার থেকে টানা ভারী বর্ষনের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের শাল বাগান এলাকায় অস্থায়ীভাবে নির্মিত বিশেষ ব্যবস্থায় সড়কটি ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠায় শুধুমাত্র সিএনজি,এম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে। এ স্থানে  ছোট ছোট পাহাড় ধসে পড়ার কারেণ ঝুকিপূর্ন পড়েছে। এছাড়া টানা বর্ষনের ফলে সোমবার রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের খামার পাড়া এলাকায় নতুন করে ২৫ মিটার রাস্তার সম্পূর্নভাবে ভেঙ্গে গেছে। বর্তমানে এ ভাঙ্গনের স্থান দিয়ে বৃষ্টি পানি প্রবাহ বয়ে চলেছে।  এর আগে গেল রোববার দুপুর বৃষ্টিতে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের হিজিং পাড়া এলাকায় মেরামত করা রাস্তাটি ঝুকিপুর্ণ হয়ে উঠায় সাময়িকভাবে যান চলাচলের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।


সড়ক ও জনপথ বিভাগের রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন জানান, গত ১৩ জুন পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ ১মাস ৩ দিন পর সড়কের কতুকছড়ি ইউনিয়নের সাপছড়ি হিজিং পাড়া এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক মেরামত সম্পন্ন করার পর হালকা যানবাহনের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারী বর্ষনের কারণে মেরামত করার স্থানটি ঝুকিপুর্ণ হয়ে উঠায় গত রোববার থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে গতকাল সোমবার একই সড়কের খামার পাড়া এলাকায় নতুন করে প্রায় ২৫মিটার রাস্তা সম্পূর্নভাবে ভেঙ্গে গিয়ে পানি প্রবাহ সৃষ্টি হয়েছে।


তিনি আরো জানান, টানা ভারী বর্ষনের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের শাল বাগান এলাকায় ছোট ছোট পাহাড় ধসে পড়ছে। নিরাপত্তার জন্য শুধুমাত্র সীমিত আকারে সিএনজি ও মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে। এ দুটি সড়ক যান চলাচল অব্যাহত রাখতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন কাজ করে যাচ্ছেন।


এদিকে, ভারী বর্ষনের কারণে জেলার কর্নফুলী, কাচলং,মাইনী নদীর গতিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে জেলার কয়েকটি স্থানে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ভারী বর্ষনের কারণে বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার রাজস্থলী উপজেলা তাইডং পাড়া এলাকায় ক্রাউসিং মারমা(২৫) নামের এক গৃহ বধূ পানিতে ভেসে গিয়ে নিখোজ রয়েছেন। গেল রোববার তিনি পাশ্ববর্তী এলাকায় জুমের ক্ষেত থেকে বাড়ি ফেয়ার পথে খালের পানির প্রবল  স্রোতে ভেসে যান।



উল্লেখ্য,গেল ১৩ জুন পাহাড় ধসে  দুই সেনা কর্মকর্তা ও তিন সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যূ হয়। এ ঘটনায় ১হাজার ২৩১টি পরিবারের বাড়ী ঘর সম্পুর্ণ বিধস্ত হয়।

 

এছাড়া পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি শালবাগান স্থানে দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে রাস্তার মাটি ভেঙ্গে গিয়ে এসক সপ্তাহ সারাদেশের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কের দুটি স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে ১মাস ৩ দিন যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। আশংকা করা হচ্ছে প্রবল বর্ষনের এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থাও যে কোন মহুর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত