অতি বৃষ্টির কারনে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সড়কের বহু স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।সড়কের পাশ ভাঙ্গনের ফলে যানবাহন চলাচল করছে ঝুকি নিয়ে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গনের সম্ভাবনাময় স্থানে বালির বস্তা ফেলে মাটি ঢেলে পানির প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে আবার কোথাও গাছের বল্লা ব্লকিং করে প্লেন ড্রামসিট দিয়ে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। তবে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কে বহু স্থানে বিপদজনক ভাবে ভাঙ্গন দেখা দেয়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরী ভাবে সড়ক রক্ষার কাজে হাত দিয়েছে।
এদিকে, পাহাড় ধসের আশংকায় তিনটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুকিতে,দুইটি অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
অতি বৃষ্টিপাতের কারণে খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে দীঘিনালা উপজেলার দুরত্ব মাত্র ২৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে সড়কে অন্তত ১০ টি স্থানে সড়কের পাশ্ববর্তী পাড় ভেঙ্গে বিপদ জনক হয়ে উঠেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জরুরী ভাবে ভাঙ্গনের সম্ভাবনময় স্থানে বালির বস্তা ফেলে, মাটি ঢেলে কোথাও আবার গাছের বল্লা ব্লকিং করে ড্রামসিট দিয়ে মাটি ভরাট করে দিচ্ছে।
সড়কও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়,জরুরী ভিত্তিতে সড়ক রক্ষায় সাময়িক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাহাড়ের আর্কষনীয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেক,দীঘিনালা উপজেলা এছাড়া রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি ও লংগদু যেতে হয় এ সড়ক দিয়ে। তাই গুরুত্ব দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে।ড্রাইভার ও সাধারণ যাত্রীরা জানান ভয়ের মধ্যে তারা এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে।
এদিকে জেলার দীঘিনালা উপজেলায় পাহাড় ধসের আশঙ্কায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ক্ষেত্রপুর নামে আরো একটি বন্ধ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘোষনার আশংকা ।
বিদ্যালয় দুটি হলো উপজেলার মায়াফা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চমড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।বিদ্যালয় দুটি বন্ধের কারনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।অভিবাববকরা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। মঙ্গলবার বিকালে মায়াফাপাড়া সরকারি প্রাথমিক সামনের অংশ ধসে গেছে। যে কোন মুহুর্তে ধসে পড়তে পারে পুরো বিদ্যালয় ভবন। টানা বর্ষণের কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরেই স্কুলছুটি ঘোষণা করেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিদ্যালয় দুটি দ্রুত সংস্কার করার দাবী এলাকাবাসীদের।
শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা জানান মঙ্গলবার বিকেলে মায়াফা পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অংশ ধসে পড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতংতি হয়ে পড়ে। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক টিপলু বড়–য়া কর্তৃপক্ষের অনুমতি বিদ্যালয়টি অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করেন।
তিনি আরো জানান বিদ্যালয়টি পুরোপুরি পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে আছে। গত মার্চ মাসে ঝুঁকি এড়াতে ধারক দেয়াল তৈরি করা হলে ও ঝুঁকির আশঙ্কা থেকেই যায়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষকসহ ১শত পাঁচজন ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত আছে। ভারী বর্ষণ হলেই পাহাড় ধ্বসের ভয় মাথায় নিয়েই ক্লাস নিতে হয়। অন্যদিকে ঝুকির আশংকায় চৌমড়াছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষনা করা।
খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক সমিতিসাধারণ সম্পাদক এসএমশফি বলেন খাগড়াছড়ি জেলার সড়ক গুলো এমন অবস্থা যে কোন বড় ধরনের দুঘর্টনা ঘটে যেতে পারে। তিনি দ্রুত সড়ক গুলো মেরামত করার দাবী জানান।
দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:শেখ শহিদুল ইসলাম জানান বিদ্যালয় দু’টি পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বড় ধরনের ঝুঁকি এড়াতে মায়াফা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চৌমড়াছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ভারী বর্ষন কেটে না যাওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয় দুটি বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, অতি বর্ষনের পরও খাগড়াছড়ি জেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তুলনা মূলকভাবে এখনো ভালো রয়েছে। তবে জেলার রামগড়,মানিকছড়ি সড়ক গুলো দীঘিনালা হতে বাঘাইছড়ি,দীঘিনালা হতে লংগদু উপজেলার সড়কের অবস্থা বেশ ঝুকিপূর্ণ। এসব সড়ক রক্ষা সড়ক ও জনপথ বিভাগ তৎপর রয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.