কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা ৪০ পরিবারের কি হবে? তাদের এখন কোথায়, যাবে কোথায়, তাদের ঠিকানা কোথায় হবে। এ চিন্তায় পরিবারগুলো অস্থির অবস্থায় দিনযাপন করছেন।
গত মাসে টানা বর্ষনে কাপ্তাই এলাকার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধ্বস ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তখন পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলোকে রাখার জন্য উপজেলায় ৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অধিকাংশ পরিবারগুলো নিজ নিজ বসতঘরে চলে গেলেও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত ৪০টি পরিবার এখনও কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসব পরিবার কাপ্তাই লগ গেইট ও নতুন বাজার এলাকার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাস করতো। এদের স্থায়ী পুর্নবাসনের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট অনেক লেখালেখি হয়। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। সর্বশেষ গতকাল রোববার উপজেলা পরিষদে ৪০টি পরিবারকে পুর্নবাসনের জন্য এক জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ দিলদার হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তারিকুল আলম, উপজেলা আ’লীগ সভাপতি অংচুইছাইন চৌধুরী, কাপ্তাই বন রেঞ্জ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, কাপ্তাই থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ নুর মোহাম্মদ, কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌঃ আব্দুল লতিফ সহ ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা শুরু হবে বিধায় এসব পরিবারগুলোকে উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে আপাতত সরিয়ে বন বিভাগের পরিত্যাক্ত ভবন, কাপ্তাই ১০ শয্যা হাসপাতালের পরিত্যাক্ত ঘর, জাকির হোসেন সমিলের পিছনের পরিত্যাক্ত ঘর, বিএফআইডিসি ক্লাবে রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ দিলদার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বন বিভাগের বিভিন্ন পরিত্যাক্ত জায়গায় এসব পরিবারগুলোকে স্থায়ীভাবে পুর্নবাসনের জন্য যে কোন শর্তের বিনিময়ে বন বিভাগকে প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু স্থানীয় বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের লিখিত নির্দেশ ব্যতিত তারা কোথাও এসব পরিবারকে বসবাসের অনুমতি দিতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, পরিবারগুলোকে পুর্নবাসনের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য ১৩ই জুন টানা বর্ষনে পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় ১৮ জনের প্রাণহানি ও ৬৫ জন আহত হয়। এছাড়া ঘরবাড়ি ও সহায় সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনকে সরিয়ে আনা হয় উপজেলার ৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে। এর মধ্যে মুরালিপাড়ায় ৪০ পরিবার, রাইখালীতে ২০ পরিবার ও কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫০ পরিবার আশ্রয় নেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে অধিকাংশই নিজ নিজ বসতঘরে চলে যায়। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বিধায় ৪০টি পরিবার এখনও কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে বলে জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.