পাহাড় ধসের ঘটনার পর রাঙামাটিতে পর্যটকের সংকট

Published: 23 Jun 2017   Friday   

পাহাড় ধসের ঘটনার পর রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের শূন্য অবস্থায় বিরাজ করছে। আসন্ন ঈদ ছুটিকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত  হোটেল ও মোটেলগুলোতে অগ্রিম রুম বুকড হয়েছে তাও অধিকাংশ বাতিল করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, গেল ১৩ জুন ভারী বর্ষনে রাঙামাটি শহরের ভেদভেদীর যুব উন্নয়ন বোর্ড এলাকা,মুসলিম পাড়া.শিমুলতলী এলাকা,সাপছড়ি,মগবান,বালুখালী এলাকায় এবং  জুরাছড়ি,কাপ্তাই,কাউখালী ও বিলাইছড়ি এলাকায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যূ ঘটে। এ ঘটনায় শুধুমাত্র রাঙামাটি শহরের  জন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব লোকজন ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহন করেছেন। এছাড়া জেলায় ১৬শ থেকে ১৭ শ ঘরবাড়ি সম্পূর্ন ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পাহাড় ধসের কারণে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক বিধস্ত হয়ে পড়লে এক সপ্তাহ ধরে সেনাবাহিনী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ চেষ্টা চালিয়ে গত বুধবার হালকা যানবাহন চলাচলের সক্ষম হয়।

 

 সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,সম্প্রতি ভারী বর্ষনে  পাহাড় ধসের কারণে  দেশের অন্যতম পর্যটনের সৌন্দর্যৗর রাঙামাটির পর্যটন স্পটগুলোতে এখন পর্যটক শুন্য অবস্থায় বিরাজ করছে। আসন্ন ঈদুল ফিতরে সরকারী লম্বা ছুটি শুরু হতে যাচ্ছে। এই ঈদের ছুটিতে প্রতি বছর দুরদুরান্ত থেকে ভ্রমন পিপাসু লোকজন রাঙামাটির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসেন। হোটেল-মোটেলগুলোতে রুম আগাম বুকড হয়ে যায়। তাছাড়া ঈদের ছুটি আগে থেকে রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন ঘটে।  কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্র দেখা দিয়েছে।  এবার ঈদের ছুটিতে হোটেল মোটেলগুলোতে বুকিং নেই বললেই চলে। যারা ইতোমধ্যে হোটেলে রুম বুকড করেছেন তারাও বাতিল করে ফেলেছেন। যার কারণে এবার ঈদের ছুটি কেন্দ্রে করে পর্যটন ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিতে পারে। রাঙামাটি শহরে ৪২টি হোটেল-মোটেল রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে রাঙামাটিতে কয়েকশত বোট চালক বর্তমানে পর্যটক না আসায় বেকার অবস্থায় দিন যাপন করছেন।

 

এদিকে, রাঙামাটির অন্যতম সরকারী পর্যটন কেন্দ্র হলিডে কমপ্লেক্সো নতুন নির্মাণ করা ভবনের পাশে মাটি ধসে গেছে। এছাড়া পর্যটন ঝুলন্ত সেতুর পাশে ও সেতুর ওপারের শিশু পার্কের মাটি ধসে পড়েছে। তবে পাহাড় ধসে পর্যটন এলাকায় কতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা জানা  যায়নি।

 

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক ব্যবস্থা চালু হয়েছে সেহেতু প্রাকৃতি পরিবেশ পরিস্থিতি যদি ভাল থাকে এবার ঈদের ছুটি থেকে পরবর্তী ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যটকদের আশানুরুপ সাড়া পাবেন। কারণ বর্যা মৌসুমে রাঙামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠে এবং শুভলং ঝর্না এখন নতুন রুপে সেজেছে। একারণে ঈদের ছুটি ও তার পরবর্তী দিনগুলোতে রাঙামাটির পর্যটনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে আসার জন্য উদ্ধুদ্ব করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

রাঙামাটিতে সৌন্দর্য্য উপভোগ করার মধ্যে রয়েছে আকর্ষনীয় ঝুলন্ত সেতু,শুভলং ঝর্না, চাকমা রাজার রাজ বাড়ী, রাজ বন বিহার, কাপ্তাই হ্রদে নৌ ভ্রমনসহ ইত্যাদি।

 

হোটেল মোটেল ব্যবস্থাপক আবুল কালাম জানান, পাহাড় ধসের ঘটনার পর থেকে তার মোটেলে পুরোপুরি পর্যটন শুণ্য। ঈদের ছুটিতে রাঙামাটির বাইরে থেকে যারা অগ্রিম রুম বুকড করেছেন তারাও ইতোমধ্যে রুম বুকড বাতিল করেছেন। এভাবে চলতে থাকলে পর্যটন ব্যবসায় লোকসান গুনতে হবে।

 

গ্রীন ক্যাসেল ব্যবস্থাপক গৌতম দাশগুপ্ত জানান, তার হোটেলেও এখন পর্যটক শুন্য। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তার হোটেলে শতকরা ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ রুম বুকড হয়েছে তা বাতিল হয়েছে। অন্যান্য  বছরে এই ঈদ ছুটির মৌসুমের সময় অগ্রিম রুম বুকড দিতে চাইলেও রুম না থাকার কারণে দিতে পারি না।

 

রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ও হোটেল প্রিন্সের সত্বাধিকারী নেসার আহমেদ জানান, তার হোটেলে বতর্মানে পর্যটক নেই। তবে  ইতোমধ্যে ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তার হোটেলে শতকরা ৪০ভাগ রুম বুকড হয়ে গেছে। আশা করছি প্রাকৃতি পরিবেশ পরিস্থিতি ভাল থাকলে ঈদের ছুটি ও তার পরবর্তী সময়ে পর্যটকের প্রচুর আগমন ঘটবে।

 

রাঙামাটি সরকারী পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে পর্যটন মোটেলে আশানুরুপ পর্যটকদের সাড়া পাওয়া না গেলেও ঈদের ছুটির সময়ে অনেক পর্যটক বেড়াতে আসবেন।  ইতোমধ্যে রুমের রংকরণসহ অনেক কমপ্লেক্সেও বিভিন্ন স্থানে  নতুন করে মেরামত কনে ফেলেছি। তারপরও এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এবার পর্যটকের আগমন কম হলেও আগামী পর্যটন মৌসুমে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। এবার কিছুটা লোকসান হলেও পর্যটন মৌসুমের সময় কাভার দেয়া সম্ভব হবে। 

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত