রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে চিকিৎসাধীন দু’জনের মৃত্যু মৃতের সংখ্যা ১১৫-তে দাঁড়ালো

Published: 18 Jun 2017   Sunday   

রাঙামাটিতে অতি বৃষ্টির কারনে আহত অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশু সহ ২ জনের মৃত্যু হওয়াতে এ নিয়ে এ দূঘর্টনায় নিহতের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১৫ তে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে যারা সরকারী আশ্রয় শিবির সমূহে অংশগ্রহন করেছে তাদের সংখ্যা দাড়িয়েছে ২১শ তে।

 

জানা যায়, গেল মঙ্গলবার পাহাড় ধসের ঘটনার আহত অবস্থায় শহরের মুসলিম পাড়া এলাকার বজলুর রহমানের আড়াই বছরের ছেলে জিসানকে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে গতকাল রবিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যায়। এছাড়া একই দূঘর্টনায় আহত শিমুলতলীর বাসিন্দা সিএনজি চালক মোঃ নুরুন নবীও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মারা গিয়াছে এবং শহরের লোকনাথ মন্দিরে নিচে দক্ষিণ মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা অজ্ঞাতনামা এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে গেল শনিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দারা।


অপরদিকে, পাহাড় ধসের কারণে বিধ্বস্থ রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ির শালবাগান এলাকার সড়ক মেরামতের কাজ দ্রুত গতিতে কাজ শুরু করেছেন সড়ক ও পথ বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর। তবে প্রতিদিনের বৃষ্টিúাতের কারণে এ মেরামত কাজে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে বলে সেখানে কর্মরত সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মুছা সংবাদকে জানান। এ মেরামত কাজ দেখার জন্যে শালবাগান এলাকা গেলে দেখা যায় মূল সড়কের এ অংশটি প্রায় ১৫০ ফুট র্দীঘ হবে। আপাতত সেটিকে হালকা যানবাহন চলাচল উপযোগী করে তোলার ক্ষেত্রে পাহাড়ের গায়ে বালির বস্তা দিয়ে বিকল্প পথ তৈরীর কাজ চলছে। মেরামত কাজে সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য মতে, আজ সোমবারের মধ্যেই ভাঙ্গনকৃত অংশটি মাটি ভরাট করে ইট বিছিয়ে হালকা যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা যাবে যদি রাতে কোন ধরনের প্রবল বৃষ্টি না হয়।


অপরদিকে রোববার সকাল ১১ টায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান তাঁর সম্মেলন কক্ষে চেম্বার অব কমার্স ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি স্থানীয় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে রাঙ্গামাটিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন ও সরবরাহ নিশ্চিতের পাশাপাশি রাঙ্গামাটি শহরের আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ স্বাভাবিক করণে সভা করেছেন। সভায় জেলা প্রশাসক বলেন, আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে যে কেউ ত্রাণ বিতরণ করতে চাইলে তা জেলা প্রশাসনকে জানাতে হবে। জেলা প্রশাসন তা সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থদের বিতরণ করবেন। তিনি আরো বলেন, পাহাড় ধ্বসে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা এখনো সম্পূর্ন হয়নি। এতে আরো কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। বর্তমানে রাঙামাটি শহরে ১৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিতদের মাঝে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবিকে খাবার বিতরনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।


তিনি বলেন, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য চট্টগ্রাম থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রি রাঙামাটিতে আনার ক্ষেত্রে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক সম্পূর্ন চালু হওয়ার আগ পর্ষন্ত প্রতিদিন দুটি লঞ্চের মাধ্যমে কাপ্তাই হয়ে রাঙামাটিতে পৌছানো হবে। এসব মালামালের পরিহনের ব্যয় সম্পূর্নভাবে সরকার বহন করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে জ্বালানী তেলের আর কোন সংকট নেই কেননা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের তিনটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার লিটার জ্বালানী তৈল রাঙামাটিতে লঞ্চযোগে আনার ব্যবস্থাও শুরু হয়ে গেছে গত শনিবার থেকে। ক্ষতিগ্রস্ত রাঙ্গামাটির দ্রব্যমূল্যের ঊর্দ্ধগতি ও দুস্প্রাপ্যতা বিষয়ক বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত খবরাখবরের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন বাস্তবতা হচ্ছে ভিন্ন।

 

অর্থাৎ এসমস্ত সংবাদদাতা বা সাংবাদিকবৃন্দের কেউই রাঙামাটি শহরে এসে বাজার মূল্যের সঠিকতা যাচাই করেছেন বলে তিনি বিশ্বাস করেন না। এসময়ে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকদের কেউ কেউ তাঁর সাথে একমত পোষন করেন। উল্লেখ্য জেলা প্রশাসক গতকাল রবিবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার, তবলছড়ি বাজার, বনরূপা বাজার ও ভেদভেদী বাজার পরিদর্শন করেন এবং ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পাশাপাশি মানবতার প্রতি অধিকতর যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত