পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন সন্তু লারমা

Published: 29 Nov 2014   Saturday   

 

 

 

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি(পিসিজেএসএস) সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা) পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। তিনি সরকারকে চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ৩০ এপ্রিল ২০১৫-এর বেঁধে দিয়ে বলেন, এ সময়সীমার মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগ্রতি না হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনের পথে পা বাড়াবে। পার্বত্য চুক্তি পরিপন্থী ও জুম্ম স্বার্থ বিরোধী সকল কার্যক্রম বন্ধ করা এবং চুক্তি বাস্তবায়নের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করতে বিদ্যমান পরিস্থিতি অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ বা অশান্তিপূর্ণভাবে ১ মে থেকে অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচী পালন করতে বাধ্য হবে।পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ১৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শনিবার রাজধানী ঢাকার সুন্দরবন হোটেল কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে সন্তু লারমা এ ঘোষনা দেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সন্তু লারমা। সংবাদ সন্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ ও পিসিজেএসএসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, আইইডি নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, মানবাধিকার কর্মী এ্যাড. নীলুফার বানু, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজীব মীর, চলচ্চিত্রকার রাশেদ রাইন, আদিবাসী ফোরামের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিনোতাময় ধামাই, জনসংহতি সমিতির নেতা দীপায়ন খীসা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সন্তু লারমা বলেন, সরকার চুক্তি বাস্তবায়ন বিষয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছে ত অসত্য, বিভ্রান্তিকর ও মনগড়া। চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির সর্বশেষ কখন অনুষ্ঠিত হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরে সন্তু লারমা বলেন, সর্বশেষ বৈঠকটি কবে হয়েছে তা তিনি স্মরণ করতে পারছেন না। তিনি বলেন এই হল সরকারের চুক্তি বাস্তবায়নের নমুনা। সংবাদ সম্মেলনে আই.ই.ডি.-এরনির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান তার সংহতি বক্তব্যে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা আশা করেছিলাম বাংলাদেশ বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু ধর্মের একটি রাষ্ট্র হবে। কিন্তু তার পরিবর্তে রাষ্ট্র এক ভাষা, এক জাতি ও এক ধর্মের হয়েছে এবং আদিবাসীদের সঙ্গে রাষ্ট্র বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। মানবাধিকারকর্মী এ্যাড. নীলুফার বানু বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা একটি জাতীয় ও রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য শান্তি চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু সরকার তার দায়িত্ব যথাযথভাবে প্রতিপালিত করছেনা। চুক্তি সম্পাদনের পর যে পক্ষ চুক্তি বাস্তবায়ন করবে অসহযোগিতা করবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় রয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, অন্যতম জাতীয় নেতা সন্তু লারমা যে আন্দোলনের কর্মসূচী দিয়েছেন এই কর্মসূচীর সাথে ভিন্নমত থাকার কোন প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন দেশের আপমার জনগণ জনসংহতি সমিতির এই অসহযোগ আন্দোলনের সাথে একাত্ম প্রকাশ করে এই আন্দোলনে শরীক থাকবে। এই কর্মসূচী দূর্বিসহ জীবন, সংগ্রাম ও বঞ্চনার প্রতিদিনকার নির্যাতনেরই প্রতিফলন বলে তিনি উল্লেখ করেন। কায়েমী স্বার্থবাদী আমলা চক্র, সামরিকতন্ত্র এবং উগ্র মৌলবাদী শক্তি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির প্রতিটি ধারা-উপধারাকে বাধাগ্রস্থ করছে বলে তিনি উলে¬খ করেন। বাংলাদেশের এই এক-দশমাংশ অঞ্চলে অপারেশন উত্তরণ কর্মসূচী ও শান্তকরণ কর্মসূচীর পেছনে সরকার বছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য সেটলারদের মাঝে বিতরণ করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন সরকার তাদেরকে ব্যবহার করছে মানব ঢাল হিসেবে। সরাকেরর একটি অংশের মধ্যে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে পাকিস্তানী ভাবধারা কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সকল পাকিস্তানপন্থী চক্রের চিন্তাধারায় সরকার অনেকাংশে জিম্মি। যার ফলে সরকার আদিবাসীদের শুধু প্রতিশ্র“তি দেয়, চুক্তি করে, কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন করে না।
— হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত