কাপ্তাই হ্রদের গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে বুধবার থেকে রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে পাহাড়ী সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু-সাংক্রান।
পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত এগার ভাষাভাষি ১৪টি পাহাড়ী সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক উৎসব হল বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু-সাংক্রান। তিন দিন ব্যাপী উৎসবের গতকাল বুধবার ছিল প্রথম দিন “ফুল বিজু”। এদিনে পাহাড়ী সম্প্রদায় নদীতে সারা বছর শান্তিতে থাকার জন্য জলদেবীর উদ্দেশ্য ফুল ভাসায়, বয়জ্যেষ্ঠদের স্নান করায় এবং বনফূল দিয়ে বাড়ী ঘরদোয়ার সাজিয়ে থাকে।
এদিকে বুধবার ভোরে শহরের রাজবাড়ী ঘাটে চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্যে দিয়ে এই উৎসবের সূচনা করেন। এসময় পাহাড়ী সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ এ সময় কাপ্তাই হ্রদের পাড়ে ফুল ভাসান। অনুষ্ঠানে বিজু উদ্্যাপন কমিটির সুকৃতি রঞ্জন চাকমা, বিজয় কেতন চাকমা, ইন্দ্র দত্ত তালুকদার সহ চাকমা সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে,ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শহরের গর্জনতলী এলাকায় নদীতে ফূল ভাসানো, বয়স্কদের স্নান করানো, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার। এতে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা।
এদিকে,পাহাড়ের প্রতিটি পাহাড়ী সম্প্রদায়ের পাড়ায় মহল্লায় ও ঘরে ঘরে চলছে এখন উৎসবের আমেজ। বৃহস্পতিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন “মূল বিজু”। এই উৎসবটি উচ্চারনগতভাবে বিভিন্ন নামের পালন করা হলেও এর নিবেদন কিন্তু একই। তাই এ উৎসবটি আদিবাসী পাহাড়িদের শুধু আনন্দের নয়, সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সম্প্রদায়ের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক, ঐক্য ও মৈত্রী বন্ধনের প্রতীকও বটে। বাংলা বর্ষের শেষ দুদিন ও নতুন বছরের প্রথম দিন এই উৎসব পালন করে থাকেন পাহাড়ী সম্প্রদায়।
চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু-সাংক্রান-এর শুভেচ্ছা কামনা করে বলেন, এ উৎসবের তাৎপর্য হল পুরাতন বছরকে বিদায় দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া। যাতে সামনে দিনগুলো যাতে ভালো আসে, শান্তিতে স্থিতিশীলতায় অধিকার চর্চা করে দিনগুলো কাটাতে পারি। পাশাপাশি পুরাতন যে গুলো মন্দ সেগুলো যেন চলে যায় ভাল যেগুলো রয়েছে সেগুলো ধরে রাখতে পারি তার আহ্বান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.