এবার মৌসুমে রাঙামাটিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদিত টসটসে মিষ্টি রসালো তরমুজ এখন বাজারে। তবে বাম্পার ফলন হলেও কাপ্তাই লেকের পানি সময় মতো না কমায় এবার মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়েছে একদম কম। ফলে বিপাকে পড়ে হতাশায় ভূগছেন বলে জানান চাষীরা।
স্থানীয় চাষী ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুম শুরুতেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কাপ্তাই লেকে ভেসে ওঠা জমিতে ব্যাপক হারে তরমুজের চাষাবাদ হয়। ফসলে আসে উচ্চ ফলন। এখানকার উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হয়ে যেত ঢাকা, চট্টগ্রামসহ জেলার বাইরে। আর অর্থনৈতিকভাবে আয়-উপার্জনে সক্ষম হন চাষীরা। কিন্তু ফি বছর ডিসেম্বরের দিকে আবাদ শুরু হলেও এবার মৌসুমে ঠিক সময়ে কাপ্তাই লেকের পানি কমিয়ে না দেয়ায় চাষাবাদে মারাত্মক বিঘœ ঘটেছে। ফলে চাষাবাদে বিপাকে পড়ে চরম হতাশায় ভূগছেন চাষীরা। অন্যদিকে আবাদ কম হওয়ায় বাজারে তরমুজের দাম চড়া। বড় ও মাঝারি সাইজের প্রতি তরমুজ এখন বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১৫০-২০০ টাকায়। আর ছোট সাইজের তরমুজগুলোর দাম গড়ে ৫০-১০০ টাকা।
কথা বলে কয়েকজন চাষী বলেন, এ মৌসুমে যারা তরমুজের আবাদ করতে পেরেছেন তাদের ফসলে বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রি করছেন উচ্চ দরে। এতে অর্থনৈতিকভাবে বিরাট লাভবান তারা। আর কাপ্তাই লেকের পানি ঠিক সময়ে না কমায় চাষাবাদে যারা বঞ্চিত হয়েছেন তাদের কপালে উঠেছে হাত।
জেলার বরকলের কুটকুটি ছড়ার বাসিন্দা তরমুজ চাষী আবদুল জলিল বলেন, তিনি এবার মৌসুমে কেবল পাঁচ হাজারের মতো থালা করে তরমুজের আবাদ করতে পেরেছেন। তবে আবহাওয়া ও সঠিক চাষাবাদে ফলন ভালো এসেছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রমণী কান্তি চাকমা বলেন, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানি কমে গেলে প্রচুর আবাদী জমি ভেসে ওঠে। সেই সব জমিতে প্রচুর তরমুজের আবাদ করেন স্থানীয় চাষীরা। আসে বাম্পার ফলন। এতে চাষীদের আসে বিপুল অর্থনৈতিক আয়। সুবিধা পান মধ্যসত্ত্বভোগীরাও।
তিনি জানান, গত বছর জেলায় ২শ’ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। কিন্তু এবার মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি দ্রুত না কমায় চাষাবাদ হয়েছে খুব কম। এবার মৌসুমে কেবল ৪৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ সম্ভব হয়েছে। ফলে চাষীরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এবার মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়েছে লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও বরকল উপজেলার কিছু কিছু জায়গায়। আবাদ হয়েছে টোফেল, গ্লোরি ও চ্যাম্পিয়ন জাতের তরমুজের বীজ।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কৃষিবিদদের গবেষণার রিপোর্টে জানা যায়, উপযুক্ত আবহাওয়া এবং উন্নত চাষাবাদের কারণে সাম্প্রতিক মৌসুমগুলোতে রাঙামাটিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হচ্ছে। এবার মৌসুমেও আবাদ কম হলেও উচ্চ ফলন এসেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.