কাপ্তাইয়ের অজ্ঞাতরোগে একই পরিবারের ৩ সন্তান মৃত্যুর মুখে!

Published: 29 Jan 2017   Sunday   

সম্পুর্ন সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে জন্ম হয় মোঃ গিয়াস উদ্দিন ও শাহিন আকতার দম্পতির প্রথম সন্তান জাহিদ হাসান। পাঁচ বছর পর্যন্ত স্বাভাবিক থাকার পর হটাৎ একদিন তার জ্বর হয়। এর পর হতে দিন দিন জাহিদের পায়ের শক্তি কমতে থাকে। সে শয্যায় পড়ে যায়। দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী হয়ে ২০০৫ সালে ১০ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টিকে এ দম্পতি নিয়তি বলে মেনে নেয়।

 

কিন্তু একইভাবে পরে মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া স্মৃতি (১৬), যমজ সন্তান আহসান হাবিব (৫) ও আসাদুজ্জামান (৫) অজ্ঞাত এরোগে আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে শয্যাশায়ী। মাঝে জন্ম নেওয়া স্কুল পড়ু–য়া দু’টি মেয়ে সুস্থ আছে। এ দম্পতির বসবাস কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা কেপিএম চিত্ত বিনোদন বেন্দ্র সংলগ্ন ফার্নিচার দোকানে।

 

সন্তানদের এ করুন অবস্থা দেখে দিশেহারা গিয়াস উদ্দিন তিন সন্তানকে নিয়ে প্রথমে চট্টগ্রামের নিউরো সার্জন অধ্যাপক এসএম নোমান খালেক চৌধুরীর শরনাপন্ন হন। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা তার জানা না থাকায় তিনি তাদের চট্টগ্রামস্থ মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকদের দেখানোর পরামর্শ দেন। সেখানে ডা. তৌহিদুজ্জামানের নিকট নিলে তারা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ”খিচুনি রোগ” বলে কিছু ওষুধ এবং ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। এতে রোগীর অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। প্রকৃতপক্ষে কি ধরনের রোগ হয়েছে তা নির্নয়ে আর্থিক অনটনের কারনে উন্নত চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি গিয়াস উদ্দিনের। ফলে স্থানীয়ভাবে সন্তানদের নানাভাবে চিকিৎসা চলতে থাকে।


জানা যায়,পাঁচজন মানুষের মতই অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রায় ২৬ বছর পুর্বে সংসার জীবন শুরু করেন ছোটখাটো ফার্নিচার ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন দম্পতি। একে একে ৬ টি সন্তান আসে স্ত্রী শাহিন আকতারের কোলজুড়ে। বড় সন্তান ছেলে, তারপর ৩ মেয়ে এবং অপর যমজ ২ ছেলে। প্রথম সন্তান ছেলে হলে তাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখতে থাকেন তারা। ৫ বছর যেতে না যেতেই বড় ছেলে একদিন জ্বর হয়ে দু’ পায়ের শক্তি হারিয়ে শয্যাশায় হয়ে পড়ে।

 

১০ বছর পর প্রতিবন্ধী অবস্থায় ছেলেটি মারা যায়। তখন বিষয়টিকে তারা নিয়তি বলে মেনে নেয়। একইভাবে মেঝ মেয়ে এবং ছোট যমজ ২ ছেলে ৫ বছর পর্যন্ত ভাল থাকার পর `এরোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে তাদের হাত-পায়ের শক্তি চলে যায়। তারা আর হাটতে চলতে পারেনা। বর্তমানে তারা খাওয়া-দাওয়া তেমন করতে পারেনা। প্রথম সন্তানের মত চোখের সামনেই তিনটি সন্তান দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এমতাবস্থায় স্বল্প আয়ের গিয়াস উদ্দিন স্থানীয়ভাবে এদের চিকিৎসা করালেও অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না। চোখের সামনে সন্তানদের করুন অবস্থা দেখা ছাড়া আর কিছুই করার নেই এ দম্পতির। সন্তানদের উন্নত চিকিৎসার জন্য এ দম্পতি দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান।


কান্না জড়িত কন্ঠে তারা বলেন, টিভিতে বিভিন্ন সময় দেখি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় মানুষদের নানাভাবে সাহায্য করে থাকেন। একজন মা হিসেবে তিনি আমাদের নিষ্পাপ এ সন্তানদের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তারা আশা করেন। যাতে তাদের সন্তান সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পায়।

 

দেশ বিদেশের কোন হৃদয়বান ব্যক্তি তাদের সাহায্য পাঠাতে চাইলে সঃ হিসাব নং ১০৮৮৫ অগ্রণী ব্যাংক, চন্দ্রঘোনা শাখা, কাপ্তাই, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা অথবা বিকাশ মোবাইল ০১৮৩২৭৫১২৮৫ নম্বরে পাঠাতে পারেন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত