রাঙামাটির কর্ণফুলী পেপার মিলকে বাচাঁতে কাপ্তাইয়ে মানবন্ধন

Published: 11 Jan 2017   Wednesday   

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী পেপার মিল-কেপিএম বন্ধের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বুুধবার কাপ্তাইয়ে মানববন্ধন করেছে কেপিএমের সর্বস্তরের শ্রমিক কর্মচারি ও স্থানীয় জন সাধারণ।

 

কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ির প্রধান সড়কের দুইপাশে ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে একাত্বতা ঘোষনা করে কর্ণফুলী ডিগ্রী কলেজের ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় ব্যবসায়ী, জনসাধারণ, সরকার দলীয় নেতাকর্মী ও বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কর্মচারী এতে অংশ গ্রহন করে। মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক পার্বত্য বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আ’লীগ সভাপতি দীপংকর তালুকদার।

 

উপজেলা আ’লীগ সভাপতি অংসুই ছাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কেপিএম শ্রমিক কর্মচারী পরিষদ সাধারণ সম্পাদক মাকছুদুর রহমান মুক্তার, ওয়ার্কাস ইউনিয়ন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্ছু, এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (সিবিএ) সভাপতি তৌহিদ আল মাহবুব চৌধুরী, উপজেলা আ’লীগ সহ সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, উপজেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক থোয়াইচিং মং মারমা, জেলা আ’লীগ শ্রম সম্পাদক মোঃ হানিফ, জেলা আ’লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মফিজুল হক প্রমুখ।

 

প্রধান অতিথি বক্তব্যে দীপংকর তালুকদার বলেন, বর্তমান সরকার শিল্প ও শ্রমিক বান্ধব সরকার। এ সরকার অনেক বন্ধ কারখানা চালু করেছে। তাই আ’লীগ সরকারের সময় কেপিএম বন্ধের প্রশ্নই আসেনা। তিনি বলেন, আগামী ফেব্র“য়ারী, ২০১৭ মাসে সিবিএ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পুর্বে কোন শ্রমিক কর্মচারীকে অন্যত্র বদলী না করার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।

 

মানববন্ধনে শ্রমিক নেতারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিখ্যাত কর্ণফুলী পেপার মিলের লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে একটি মহল কেপিএম বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। শ্রমিক নেতারা কেপিএম বন্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে বলে নেতারা হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

 

বক্তারা আরো বলেন, ৬/৭ মাস পুর্বে মিলে দৈনিক ৮০ টন কাগজ উৎপাদন হলেও বর্তমানে রহস্যজনক কারনে তা ২৫/৩০ টনে নেমে এসেছে। জানুয়ারী থেকে মার্চ’২০১৬ পর্যন্ত ৩৩০ জন শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলী করা হয়েছে। বর্তমানে আরো ২শ’ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাকে অন্যত্র বদলীর প্রক্রিয়া চলছে।

 

বর্তমানে মিলে প্রায় ১১শ’ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা কর্মরত আছে। এমতাবস্থায় মিলের শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের নভেম্বর ও ডিসেম্বর, ২০১৬ মাসের বেতন ও শ্রমিকদের ৫ মাসের অধিকাল ভাতা পরিশোধ করা হয়নি। পাশাপাশি ২০১৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত অবসরে যাওয়া প্রায় ২ শতাধিক শ্রমিক কর্মচারীর বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছেনা। ফলে তারা মানবেতর দিন যাপন করছেন।

 

শ্রমিক নেতারা বলেন, কেপিএমের নিজস্ব প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। মিল প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৩ বছরে কেপিএম বর্তমানে ৫৪৭ কোটি টাকা দেনা রয়েছে। এদিকে প্রতি বছর কেপিএম সরকারকে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা রাজস্ব পরিশোধ করে আসছে।

 

বক্তারা কেপিএমকে বন্ধ করার নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে বলে উল্লেখ করে এই মিলকে বাঁচাতে কর্মজীবিরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

এদিকে, এ ব্যাপারে মিলের এমডি খান জাভেদ আনোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কেপিএম বন্ধের কোন চিন্তা ভাবনা নেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। তবে নগদ অর্থের অভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করা যাচ্ছেনা। এতে উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে। তবে অর্থ পাওয়া গেলে সহসাই এ সংকট দুর হয়ে যাবে। 

 

উল্লেখ্য, ১৯৫৩ সালে পার্বত্যাঞ্চলের কাঁচামালের উপর নির্ভর করে কর্ণফুলী কাগজ কল প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন মিলে প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিল। বর্তমানে এ সংখ্যা ১১শ`তে নেমে এসেছে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত