সাড়ে তিন মাস পর কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরন ও বাজারজাত পুনরায় চালুর পর প্রথম দিনে(২১ আগষ্ট) ১শ২২ মেট্রিক টন মাছ অবতরনের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এতে এক দিনে সরকারের ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। বিএফডিসি জানায়, দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদের মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি, মজুদ এবং ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে সাড়ে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ থাকার পর গত ২১ আগস্ট থেকে কাপ্তাই হ্রদে পুনরায় মৎস্য আহরণ ও বাজারজাতকরণ চালু করা হয়। মৎস্য আহরনের প্রথম দিনে(২১ আগস্ট) বিএফডিসি’র তিনটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘাট থেকে সর্বমোট ১শ ২২ মে. টনের অধিক মাছ অবতরনের রেকর্ড করেছে। রাঙামাটির মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে ৬৯.৫০১ মেঃটন, কাপ্তাই থেকে ৪৮.০৩৪ মেঃটন এবং মহালছড়ি থেকে ৪.৬২৩ মেঃটন। ফলে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। যা এ হ্রদের মাছ অবতরণের অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়েছে। গত বছর মৎস্য আহরণ শুরুর প্রথম দিনে মাছ অবতরণ করা হয়েছিল ৯৬ মে.টন। ২০১২ সালের মৎস্য অবতরন ছিল ৩৬.৯৯২ মেঃটন। রাজস্ব আয় ছিল প্রয় ৪ লাখ টাকা। বিএফডিসির রাঙামাটির উপ ব্যবস্থাপক মোঃ মাসুদুল আলম জানান, কাপ্তাই হ্রদে সাড়ে তিন মাস মৎস্য আহরণ ও বাজারজাত বন্ধ থাকার পর তা পুনরায় চালুর প্রথম দিনে(২১ আগস্ট) বিএফডিসি-এর রাঙামাটি, কাপ্তাই ও মহালছড়ি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে এ যাবৎকাল পর্ষন্ত সর্বোচ্চ ১২২ মেঃটন মাছ অববতরণ করা হয়েছে। যা এ হ্রদ থেকে মৎস্য অবতরনের ক্ষেত্রে অতীতের সকল রেকর্ডকে ভঙ্গ করেছে। তিনি আরও জানান, চলতি বছর মাছের প্রজনন মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ বন্ধকালীন সময়ে মা ও পোনা মাছ অবৈধভাবে আহরণ ও পাচার রোধ করে কাপ্তাই হ্রদের মাছের সুষ্ঠু প্রজনন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হ্রদে প্রথম বারের মতো বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড নিয়োগ করা হয়েছে। নিয়োগকৃত কোস্ট গার্ড সদস্যগণ দিবারাত্র হ্রদেই অবস্থান করে বিভিন্ন অভিযান পরিচলনা করেছেন। এ সময় বিএফডিসি জেলা প্রশাসনের সহায়তায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচলনা করা হয়েছিল। বিএফডিসি, প্রশাসন ও পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবির প্রত্যক্ষ সহযোগিতাও অব্যাহত ছিল। তিনি বলেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা কার্যক্রমে সহায়তা করেছেন। সকল পর্যায়ের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় প্রায় সাড়ে দিন মাস ব্যাপি যে কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে তার ফল প্রথম দিনেই স্পষ্ট হয়েছে। উল্লেখ্য, কাপ্তাই হ্রদের মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি, মজুদ এবং ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে গত ৭ মে মধ্যরাত জেলা প্রশাসনের এক আদেশ বলে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশণ(বিএফডিসি) মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, শুকানো এবং পরিবহনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তিন মাস মাছ শিকার ও বাজারজাত বন্ধ থাকার পর গত ২০ আগস্ট মধ্যরাত থেকে হ্রদের উপর যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহা করা হয়।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.