পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের ন্যূনতম বেঁচে থাকার মৌলিক ও মানবধিকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না করে সরকার তথা শাসক গোষ্ঠী প্রতি মহুর্তে লংঘন করে চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(সন্তু লারমা)।
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের মৌলিক অধিকার ও মানবধিকারের লক্ষে ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। কিন্তু চুক্তির ১৯ বছরেও সরকার তথা শাসক গোষ্ঠী চুক্তি বাস্তবায়ন না করে পার্বত্যাঞ্চলে প্রতি পদে পদে মানবধিকার লংঘন ও এ অঞ্চলের মানুষের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করে চলেছে।
শনিবার রাঙামাটিতে আর্ন্তজাতিক মানবধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এ অভিযোগ করেন।
সন্তু লারমা আরো বলেন, সরকার সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের ৫০টির অধিক আদিবাসীদের জাতিগত অধিকারকে অস্বীকৃতি জানিয়ে নানা নামে অখ্যায়িত করেছে। আদিবাসীদের আত্নপরিচয়ে মৌলিক ও মানবধিকার থেকে বঞ্চিত করে সরকার নিজেই মানবধিকার লংঘন করে চলেছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ১৯ বছরেও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচনের আলোর মূখ দেখছে না। সরকার নানান অজুহাত দেখিয়ে এ অঞ্চলের মানুষের মৌলিক,মানবধিকার ও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা সমাধানের জন্য রাজনৈতিকভাবে শান্তিপূর্ন উপায়ে যে লক্ষে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা সরকার বাস্তবায়ন করছে না। অথচ দোষ দেওয়া হচ্ছে সন্তু লারমারা চুক্তি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসছে না বলে অনেক সময় সরকার ও গুনী ব্যক্তিরা এই অভিযোগ করে থাকেন। কারণ এখানে অস্ত্রের ঝনঝনানি রয়েছে। এখানে অস্ত্রের ঝনঝনানি কে সৃষ্টি করেছে। পার্বত্য চুক্তির মধ্য দিয়ে জনসংহতি সমিতির সদস্যরা সশস্ত্র আন্দোলন থেকে বেরিয়ে এসে নিস্কৃতি নিয়েছে। এরপর সরকারের একটি অংশ চুক্তি বিরোধী ইউপিডিএফকে জন্ম দিয়ে আবারও এখানে নতুন করে অস্ত্রের আমদানি করেছে। চুক্তি বিরোধী সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা এখনো এ অঞ্চলে গণ বিরোধী মানবধিকার বিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকার তাদের নিষ্ক্রিয় করছে না। এসবের জন্য দায়ী সরকার তথা শাসক গোষ্ঠী।
জাতীয় মানবধিকার কমিশন পার্বত্য অঞ্চল শাখার উদ্যোগে জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আলোচনা সভায় জাতীয় মানবধিকার কমিশনের সদস্য বাঞ্চিতা চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ)মোঃ সাফিউল সারোয়ার। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানান পেশা শ্রেনীর লোকজন অংশ নেন।
এর আগে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন কার্যালয় চত্বর থেকে শুরু হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গন পর্ষন্ত একটি র্যালী বের করা হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.