রাঙামাটির বরকল উপজেলায় সরকারী ১৭টি দপ্তরের মধ্যে ১০টি দপ্তরে কর্মকর্তা না থাকায় প্রশাসনিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে এসব সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মকর্তা নিয়োগ না দেয়ায় সরকারী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন উপজেলার বিভিন্ন পেশার মানুষ। উপজেলার দপ্তর গুলোর মধ্যে- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রায় দুমাস ধরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেই। গত ১৪ আগষ্ট বদলি হওয়ার পরে এখনো নতুন ইউএনও যোগদান করেননি। জুরাইছড়ি উপজেলার ইউএনও-কে অতিরিক্ত দায়িত্বে রেখে প্রশাসনিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা নেই প্রায় চার বছর ধরে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে কর্মকর্তা বদলির পরে আর কোন কর্মকর্তা যোগদান করেননি। জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা উপজেলা অফিসের কর্মকান্ড দেখাশুনা করছেন। দীর্ঘ ১০বছর ধরে কর্মকর্তা নেই উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে। উপজেলায় ২০০৫ সালে অধিদপ্তরের কার্যক্রম শুরু থেকেই অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। এযাবত কোন কর্মকর্তা যোগদান করেনি। বর্তমানে কাউখালী উপজেলার কর্মকর্তাকে চলতি দায়িত্বে রেখে কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা নেই চার বছর ধরে। ২০১০ সালে কর্মকর্তার বদলির পরে আর কোন কর্মকর্তা যোগদান করেনি। জেলা সদরের কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রাখা হয়েছে। উপজেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তার পদটি ২০ বছর ধরে শুন্য। ১৯৯৫ সাল থেকে শুন্য থাকার পরে ২০০৩ সালে একজন কর্মকর্তা যোগদান করে। তিন মাস থাকার পরে ঐ কর্মকর্তা বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত কর্মকর্তার পদটি শুন্য। জুনিয়র এক কর্মকর্তাকে দিয়ে দাপ্তরিক কাজ চলছে। উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর পদটি শুন্য রয়েছে প্রায় ৬বছর ধরে। ২০০৯ সাল থেকে এ পদটি শুন্য থাকায় আর কোন কর্মকর্তা যোগদান করেনি। জেলা সদরের এক উপসহকারী প্রকৌশলীকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। উপজেলার হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার পদটি ১বছর ধরে শুন্য। লংগদু উপজেলার কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে দাপ্তরিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। উপজেলা রির্সোস সেন্টারে কর্মকর্তা নেই প্রায় এক বছর। জুরাইছড়ি উপজেলার কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রাখা হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে উপজেলায় মৎস্য অফিস নেই। নেই কর্মকর্তা কর্মচারী। জুরাইছড়ি উপজেলার কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত দায়িত্বে রেখে নাম মাত্র দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। এর পরে উপজেলার পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার পদটি শুন্য ২বছর ধরে। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে কর্মকর্তার মৃত্যুর পরে আর কোন কর্মকর্তা যোগদান করেনি। বর্তমানে জুনিয়র এক কর্মকর্তা দিয়ে দাপ্তরিক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। দুর্গম প্রত্যন্ত এ উপজেলায় সরকারী এসব দপ্তরে কর্মকর্তা না থাকায় কর্মচারীরা যেমনি নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে, তেমনি সরকারী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করছেন উপজেলার বিভিন্ন পেশার মানুষ। এ ব্যাপারে বরকল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মনি চাকমা জানান, উপজেলার ১০ সেবা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা না থাকায় উপজেলার মানুষ সরকারী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কর্মকর্তাদের পদগুলি শূন্য থাকায় সরকারের প্রসাশনিক কর্মকান্ডেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। অতিদ্রুত এসব দপ্তরের শুন্য পদে কর্মকর্তা নিয়োগের ব্যাপারে সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.