আলীকদমের মহাজনের সুদের ফাঁদে আটকে বিপন্ন আদিবাসীরা

Published: 21 Oct 2014   Tuesday   

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় দুর্গম পাহাড়ী পল্লীতে মহাজনী চড়া সুদের ফাঁদে আদিবাসীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার পথে বসেছে। মহাজনদের চড়া সুদের হাত থেকে রেহায় পেতে পশ্চাৎপদ দুর্গম পাহাড়ের আদিবাসীরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সম্প্রতি ২৮জন ভূক্তভোগি ম্রো আদিবাসী কার্বারী (পাড়া প্রধান) ও জুমচাষী মানবিক প্রশাসনের কাছে এ মানবিক আবেদন জানান। তারা মহাজনদের বিরুদ্ধে চড়া সুদ আদায়ের অভিযোগও আনেন। স্থানীয় মরুং কল্যাণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইয়ংলক মরুং বলেন, দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে মহাজনরা ঋণের ফাঁদে ফেলে জুমচাষীদের সর্বসান্ত করে দিচ্ছে। এ প্রথা অবসান হওয়া প্রয়োজন। জানা গেছে, উপজেলার দুর্গম পাহাড়ী পল্লীতে বাস করেন ম্রো, ত্রিপুরা ও তঞ্চঙ্গ্যা আদিবাসীরা। তারা নানা প্রতিকূলতায় বছর বছর পাহাড়ে জুমচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। জুমচাষ করে এক চর্তুরাংশ লোকেরও বছরের খাদ্যভাব মোচন হয় না। তাই তারা মহজানদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সংসার চালান। ভূক্তভোগি লোকজন জানান, বেশীরভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী জুমচাষের ওপর নির্ভরশীল। দারিদ্রতার কারণে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী মহাজনদের কাছ থেকে ঋণ নেন। সেই সুযোগে মহাজনরা ঋণের ওপর চড়াসুদ বসিয়ে বছরের পর বছর আদিবাসীদের শোষণ করে চলছেন। চড়া সুদের ফাঁদে আদিবাসী জুমিয়া পরিবারগুলো বিপন্ন হয়ে পড়েছেন। ঋণ না নিলেও পরিবার চলে না। আবার ঋণ নিলেও অভাব মোচন হয় না। এখানকার আদিবাসীদের অবস্থা এখন জলে কুমির ডাঙায় বাঘ। জানা গেছে, প্রতি হাজারে ৬-৮ মাসে সুদে-আসলে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত মহাজনরা আদায় করেন। এদিকে, জুমের ধান কাটার আগ মুহূর্তে অর্ধেক মূল্যে দাদন দিয়ে গোলা ভরাণ মহাজনরা। আবার দাদনের টাকা কোনো কারণে আসল ও সুদ পরিশোধে ব্যতয় হলে ওই সুদও আসল বলে গণ্য হয়। পরের মৌসুমে সুদ-আসলের দ্বিগুণ টাকা দিতে হয় মহাজনদের। কুরুকপাতার ছাংক্লাং ম্রো বলেন, নির্ধারিত সময়ে দাদনের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে মহাজনের হাতে লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও বিরল নয়। চড়া সুদের ফাঁদ থেকে মুক্তি চান তারা। ভূক্তভোগিরা দাবি করে বলেন, প্রশাসন কড়াকড়ি তদারকি করলে চড়াসুদের প্রথা রোধ পাওয়া সম্ভব হবে। মহাজনের চড়া সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে অনেক ম্রো পরিবার পাশ্ববর্থী মিয়ানমারে চলে গেছেন। বিষয়টি স্বীকার করে ১নং আলীকদম ইউপি চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে জুমিয়ারা অতিকষ্টে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আদিবাসীদের চড়াসুদের ফাঁদ থেকে বাঁচাতে জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত