আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল রামু ও ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসিরনগরে হামলা চালিয়েছে। তারা চাইনা এদেশে শান্তি বিরাজ করুক।
তারা ধর্মকে পুজি করে লুটপাট ও তাদের স্বার্থ হাসিল করছে এদের চিহ্নিত করে সমাজে এদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তিনি বলেন, ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল ধর্মের সকল সম্প্রদায়ের লোক মিলে যেভাবে এই দেশ স্বাধীন করেছি ঠিক তেমনি আবারও এই স্বার্থান্বেষী মহলকে দমন করতে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সোমবার রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ঐতিহাসিক চিৎম্রং বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসব আয়োজিত ধর্মসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
চিৎম্রং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ মহা সংঘনায়ক রাজ নিকায়মার্গ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরর সভাপতিত্বে ধর্মীয়সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, পরিষদের সদস্য থোয়াইচিং অং মারমা, কঠিন চীবর দান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মংপ্রু মারমা-সহ স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান ধর্ম দেশক হিসেবে পুণ্যার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্ম দেশনা দেন কাপ্তাই রাইখালী ইউনিয়নের বড়খোলা পাড়া বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ সুমনা মহাথের, চট্টগ্রাম ফরা রং খ্রেদ ক্যং বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ঊঃ ওয়ান্নাসিরি ভিক্ষু-সহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষুগরা।
কঠিন চীবর দান উপলক্ষে চিৎম্রং বৌদ্ধ বিহারে সকাল থেকে ভিক্ষুসংঘের পিন্ডদান, বুদ্ধপূজা, কল্পতরু শোভাযাত্রা, পঞ্চশীল প্রার্থনা ও গ্রহণ, বৃদ্ধমূর্তি দান, চীবর উৎসর্গ ও দান, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, ধর্মসভা, ভিক্ষুসংঘ কর্তৃক ধর্মীয় দেশনা প্রদান-সহ নানান অনুষ্ঠানসূচি পালিত হয়। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস ওড়ানোর মধ্য দিয়ে এ মহান ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষ হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন স্থান থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ধর্মীয় সভায় দীপংকর তালুকদার আরো বলেন, দেশের প্রতিটি জনগন যে যার নার্য্য অধিকার পায় সে লক্ষে আওয়ামীগ সরকার কাজ করছে। এই সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূখী পদক্ষেপের কারণে যার যার ধর্ম সকলে সঠিকভাবে পালন করতে পারছে। কিন্তু সরকারের এই উন্নয়ন পদক্ষেপে বাঁধা সৃষ্টি করতে বিএনপি জামাত প্রতিনিয়তই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে।
তিনি বলেন, হিংসা দিয়ে হিংসা প্রতিষ্ঠা করা যায় ভালোবাসা নয়। জনগনের ভালোবাসা কিভাবে পেতে হয় তা একমাত্র আওয়ামীলীগ সরকারই জানে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণে সহায়তা দেয় কোন রাজনৈতিক কারণে নয়। এই সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী বলেই সকল ধর্মের কল্যাণে কাজ করে। তিনি বলেন, প্রত্যেক ধর্মকে শ্রদ্ধা করি বলে আমি সব ধর্মের অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে থাকি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম শান্তির ধর্ম। এ ধর্মে সবসময় সকল জীবের কল্যাণ প্রার্থনা করা হয়। ধর্মের পঞ্চশীলকে সঠিকভাবে মেনে চললে নির্বাণ লাভ করা যায়।
বুদ্ধের প্রেম, সাম্য, মৈত্রী, ক্ষমা, ত্যাগ, অহিংসা ও আত্মসংযম ধারণ করে বিশ্বমানবের সুখ-শান্তিও কল্যাণে সকলকে ব্রত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.