রাঙামাটির রাজ বন বিহারে দুদিন ব্যাপী দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু

Published: 10 Nov 2016   Thursday   

বৃহস্পতিবার থেকে রাঙামাটির রাজ বন বিহারে দুদিন ব্যাপী প্রধান ধর্মীয় উৎসব দানোত্তম কঠিন চীবর  শুরু হয়েছে।

 

উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায় বলেন,২৪ ঘন্টার মধ্য সূতা কেটে রং করে কাপড় বুনে সেলাই করণ একটি রেওয়াজ ৪৩ বছর আগে চলে আসছিল। সেই রেওয়াজের মাধ্যমে  এ অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। পার্বত্যাঞ্চলের যে জুমের সংস্কৃতি রয়েছে যেহেতু পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঐতিহাসিকভাবে কার্পাস মহল বলা হতো সেই  বয়ন শিল্পকে চর্চা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ধর্মীয় উদ্দেশ্যর সাথে এ অঞ্চলের কৃষ্টি,সংস্কৃতিকেও প্রতিফলিত করা হচ্ছে।

 

এছাড়া এ কঠিন চীবর দানকে মিলন মেলা বলা যায়। কারণ এখানে কেবল বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা না দেশের অন্যত্র থেকে বিভিন্ন মানুষ সমবেত হন। এমনকি দেশের বাইরে থেকেও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা এই অনুষ্ঠানে যোগদান করে থাকেন।

 

তিনি ভগবান বুদ্ধের  মৈত্রী, অহিংসা ও সাম্য’র নীতি রয়েছে তার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা সমগ্র বাংলাদেশ ও পৃথিবীতে যাতে মৈত্রী বৃদ্ধি পায় এবং হিংসা চলে তার কামনা করেন।

 

রাজ বন বিহার পাশে অবস্থিত ৪৩তম কঠিন চীবর দানোৎসবের প্রথম দিনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে চরকা সূতা কাটা থেকে কাপড় তৈরীর জন্য  পঞ্চশীল প্রদান  দেন রাঙামাটি রাজ বন বিহারের ভিক্ষু-সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির। পরে বেইন ঘর উদ্ধোধন ও চরকায় তুলা থেকে সূতা কাটার উদ্ধোধন করেন চাকমা সার্কেল চীফ ব্যারিষ্টার দেবাশীষ রায়।  এসময় রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি  গৌতম দেওয়ান, এ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

রাজ বন বিহার পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা  গেছে, এ বছর বেইনের (কোমড় তাঁত) মাধ্যমে সেই সূতা, কাপড় বুনন, রং ও সেলাই করে চীবর(রং বস্ত্র) তৈরীতে  এক হাজারের অধিক পূর্নার্থী সারারাত চীবর প্রস্তুত করবেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তৈরীকতৃ চীবর  শুক্রবার বিকাল ৩টায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে লক্ষাধিক পূনার্থীর উপস্থিতিতে ভিক্ষু সংঘের উদ্দেশ্য দান করা হবে।

 

এদিকে, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও তিন পার্বত্য জেলা থেকে বৌদ্ধ বিপুল পূনার্থী ছাড়াও  কয়েকটি বৌদ্ধ ধর্মালম্বী দেশ থেকে পূর্নার্থীদের সমাগম ঘটেছে। এছাড়া এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে  রাজ বন বিহারের পাশে বিভিন্ন সামগ্রির মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায়  আদিবাসীদের তৈরী হস্তশিল্প, বস্ত্র, ধর্মীয় গানের সিডি ক্যাসেড, বইপত্র, নানান স্বাদের খবরসহ বিভিন্ন পণ্যর সমাহার ঘটেছে। এছাড়া বিনোদনের জন্য নাগরদোলাসহ  নানান খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ভগবান গৌতম বুদ্ধের জীবব্দশায় মহাপূর্নবতী বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত ২৪ ঘন্টার মধ্যে সূতা কাটা শুরু করে কাপড় বয়ন, সেলাই ও রং করাসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে একে কঠিন চীবর দান হিসেবে অভিহিত করা হয়।

 --হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত