পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক বাস্তবতাকে মূল্যায়ন করে সরকারের ষড়যন্ত্রে সামিল না হয়ে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।
সোমবার পিসিপির কেন্দ্রীয় কমিটি সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না করে একের পর এক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পরিপন্থী এবং জুম্ম স্বার্থ বিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছে। তারই অংশ হিসেবে ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার রাঙামাটিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। মেডিকেল কলেজের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে না হতেই পার্বত্যবাসীর আপত্তি সত্ত্বেও আবার গত ১৫ জানুয়ারী রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রীর ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ফলে সরকারপার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে আবারো অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ জন্য যে কোন অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হয়ে নিজের বা নিজেদের ছেলেমেয়েদের সম্ভাবনাময় শিক্ষা জীবনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রেস বার্তায় আরও বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অনিশ্চিত রেখে এবং পার্বত্য চুক্তির অবাস্তবায়িত রেখে সরকার রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের নামে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। সরকার মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে নিরীহ সাধারণ ছাত্রছাত্রীদেরকে। তীব্র গণ-বিরোধিতা সত্ত্বেও সরকার একগুয়েমি ও স্বৈরতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়-মেডিকেল কলেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন ঠিক নেই (পরিচালিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে), পাঠদানের নিজস্ব কোন অবকাঠামো নেই, ছাত্র-শিক্ষকদের আবাসন ব্যবস্থার ঠিক নেই। এসব কিছু অনিশ্চিত রেখে সর্বোপরি জনমতের বিপরীতে গিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে সরকার তাড়াহুড়ো করে ভর্তি প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করেছে। শিক্ষা বিস্তারের উদ্দেশ্যে নয়, শিক্ষা উন্নয়নের নামে জুম্ম স্বার্থ বিরোধী ষড়যন্ত্র কার্যকর ছাড়া তাড়াহুড়ো করে এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা অন্য কিছু হতে পারে না।
বিবৃতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে নিজেকে বিরত রেখে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নসহ জুম্ম ছাত্র সমাজ তথা পার্বত্যবাসীর ন্যায্য দাবির প্রতি সংহতি ও একাত্মতা প্রদর্শনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.