বরকলে প্রথম শ্রেনীতে পড়ুয়া আদিবাসী শিক্ষার্থীর শরীর আগুনে পুড়েছে

Published: 07 Feb 2015   Saturday   

গরীব জুম চাষী হওয়ার কারণে শীত নিবারনের জন্য আগুন পোহাতে হচ্ছিল প্রথম শ্রেনীতে পড়ুয়া কোমলমতি শিশু হ্যাপী চাকমাকে। কে জানে শীত থেকে নিজেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আগুনের তাপ নিতে গিয়ে জীবনের এমন করুন পরিণতি হবে?

 

শনিবার রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের বড় উজ্জ্যাংছড়ি গ্রামে বাড়ীর উঠানে আগুন পোহানোর সময় আদিবাসী শিশু হ্যাপী চাকমা শরীরে এ আগুনে ঝলছে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 

আগুনে হ্যাপী চাকমার শরীরে ৩০থেকে ৪০ ভাগ পুড়ে গেছে। বর্তমানে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ব্যয়ব্হুল চিকিৎসার আর্থিক সহায়তার জন্য হ্যাপী চাকমার অসহায় পিতা-মাতা সুহৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

 

স্থানীয় লোকজন জানায়, বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের বড় উজ্জ্যাংছড়ি গ্রামে গতকাল শনিবার সকালে উজ্জ্যাংছড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী হ্যাপী চাকমা একাকী বাড়ীর সামনে শীত নিবারনের জন্য আগুন পোহাচ্ছিল। এতে অসাবধানবশত হ্যাপীর জমাকাপড়ে আগুন লাগলে সে চিৎকার করে। বাড়ী একটু দূরে ছড়ার পানি আনতে যাওয়া মা অনিবালা চাকমা মেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করলেও ততক্ষনে তার শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বরকল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর তার স্বাস্থ্য অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হ্যাপী চাকমার বাবা সুভাষ কুসুম চাকমা জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

 

হ্যাপী চাকমার মা অনিবালা চাকমা জানান, সকালের দিকে বাড়ীর একটু দুরে ছড়ার পানি আনতে যান। এসময় তার মেয়ের বাড়ীর উঠানে আগুন পোহাচ্ছিল। একটু পরে তার মেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়ে তাড়াতাড়ি বাড়েিত এসে দেখি মেয়ের জামাকাপড়ে আগুন ধরেছে। পওে আশপাশের লোকজনদের সাহায্য নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, তার মেয়ের উন্নত চিকিৎসা করার জন্য গরীব জুম চাষীর আর্থিক সামর্থ্য নেই। তিনি তার মেয়ের প্রাণ রক্ষার জন্য সমাজের সকল পেশাজীবি মানুষের কাছে আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

 

বরকল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ সিবলী সফিউল্লাহ জানান, অগ্নিদগ্ধ হ্যাপী চাকমার শরীরে ৪০ ভাগ পুড়ে গেছে। এ জন্য তার আরও উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

 

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নূয়েন খীসা জানান, অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় এক শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে শিশুটি শারীরিক অবস্থা তেমন একটা ভাল না। কারণ তার শরীরে ৩০থেকে ৪০ ভাগ পুড়ে গেছে। যে কোন মানুষের শরীরে ১০থেকে ১২ ভাগ পুড়ে গেলে জীবনের ঝুঁকি হয়ে উঠে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যথাসাধ্য চিকিৎসা দিতে। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়া চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত