রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের ২০১৬-১৭ সালের ৬০ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষনা করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের কাছ থেকে উন্নয়ন এবং সংস্থাপন ব্যয় খাতে ৫৭ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা এবং সংস্থাটির নিজস্ব খাত থেকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে সংস্থাপন ব্যয় খাতে ধরা হয়েছে ৮কোটি ৮৫ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার জেলা পরিষদের মিনি কনফারেন্সে রুমে এক সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বারের বাজেট ঘোষনা করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা ।
সংবাদ সন্মেলনে এ সময় জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু চৌধূরী, হাজী মূছা মাতব্বর, সবীর কুমার চাকমা, ত্রিদীব কান্তি দাশ,জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা, রেমলিয়ান পাংখোয়া, জেবুন নেছা রহিম ছাড়াও জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেক হোসন, জনসংযোগ কর্মকর্তা অরুন্দেন্দু ত্রিপুরাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পরিষদের প্রস্তাবিত বাজেটে এবার সবচেয়ে বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ৮কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৮কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। এছাড়া ধর্ম খাতে ৮কোটি ১৮ হাজার ৪০ হাজার টাকা, সমাজকল্যাণ, আর্থ সামাজিক ও নারী উন্নয়ন খাতে ৫ কোটি ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পূর্ত(গৃহ/অবকাঠামো নির্মাণ) খাতে ৬ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, স্বাস্থ্য,পরিবার কল্যাণ ও সুপেয় পানি খাতে ৬ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, কৃষি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ খাতে ২কোটি ৫৫ হাজার ৭৫ হাজার টাকা, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ(বৃক্স রোপন, বনায়ন) খাতে ১কোটি ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি খাতে ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, পর্যটন খাতে ১কোটি ২লাখ ৩০ হাজার টাকা, ত্রাণ ও পূর্নবাসন খাতে ১কোটি ৫৩লাখ ৪৫ হাজার টাকা, ভূমি ও হাটবাজার খাতে ৫১ হাজার ১৫ হাজার টাকা, শিশু উন্নয়ন খাতে ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং বিবিধ(পরিষদের আয় বর্ধক প্রকল্প) খাতে ৫১ লাখ ১৫ হাজার টাকা।
এছাড়া পরিষদের নিজস্ব খাত থেকে আয় (টোল,ট্যাক্স, ভূমি হস্তান্তর, বিশ্রামাগার, বিনিয়োগের সুদ, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কর ও বিবিধি) ধরা হয়েছে ২কোটি ৭০ লাখ টাকা।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা রাঙামাটি জেলায় মানসম্পন্ন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ২২৬টি বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করা হয়েছে। বেসরকারী ৭৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে পাহাড়ী জনগোষ্ঠী শিক্ষার্থীদের মাতৃভাষা লেখা-পড়ার জন্য সরকার মাতৃভাষার পাঠ্য বই সরবরাহ করা হবে। জেলার ৪টি আবাসিক প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনে চলমান রয়েছে। এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য ৪টি আবাসিক ছাত্রাবাস পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রুপকল্প ২০২১ এর ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার এই মেয়াদের মধ্যে জাতিকে উপহার দেবে রুপকল্প ২০৪১। এই নতুন রুপকল্পের হাত ধরে ২০৪১ সালে এই রাঙামাটি জেলা হবে একটি শান্তিপূর্ন, সমৃদ্ধ, সুখী ও উন্নত জনপদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের মূল লক্ষ্য হবে রুপকল্প বাস্তবায়ন করতে আমাদের যা যা করনীয় তা দ্রুত সম্পন্ন করা।
তিনি আলোকোজ্জ্বল, সমদ্ধ ও সম্ভাবনাময় আধুনিক রাঙামাটি বিনির্মাণের এই অভিযাত্রায় দেশের উন্নয়ন ও মঙ্গলার্থে সব বিভেদ ভূলে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকল ধরনের অকল্যাণকর ও জনবিরোধী কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ উজ্জীবিত একটি গণতান্ত্রিক অসম্প্রদায়িক উন্নয়নকামী সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর এ কর্ম ও আদর্শবাদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে আমাদের জাতির জনকের সোনার বাংলা।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.