লামা ও নাইক্ষ্যংছড়িতে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া বান্দরবানে শান্তিপূর্ন ভোট গ্রহন

Published: 23 Apr 2016   Saturday   

তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন নির্বাচনে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া বান্দরবানের ছয় উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন শান্তিপূর্ন ও উৎসব মুখর পরিবেশে শনিবার নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।

 

এদিকে, লামা সদর ইউনিয়নে পুলিশের ফাকা গুলিতে একজন আহত হয়েছে। আজীজ নগর ইউনিয়নে আ’লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী। ফাইতং ইউনিয়নে তিনটি কেন্দ্রে জাল অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর। নাইক্ষ্যংছড়ি দোছড়ি ইউনিয়নে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতিতে কয়েক ঘন্টা কেন্দ্রে ভোট গ্রহন বন্ধ থাকে। এমন কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে শনিবার বান্দরবানের ২৫টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই ধরণের ঘটনা ছাড়া বড় ধরণের কোনো ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা বাদ দিয়ে বিবেচনা করলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও আঞ্চলিক সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।

 

জানা গেছে, জানা গেছে, তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন নির্বাচনে বান্দরবানের ছয় উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে ৯৪ জন চেয়ারম্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। এসব ইউনিয়নের মোট  ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১লাখ ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ হচ্ছে ৭১ হাজার ৮১৪ জন এবং মহিলা হচ্ছে ৬৮ হাজার ১শ জন। মোট ভোট কেন্দ্র হচ্ছে ২২৭টি। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্ষন্ত টানা ভোট গ্রহন চলে।

 

এদিকে, ভোট গ্রহন চলাকালণি সময় লামা উপজেলার সদর ইউনিয়নে ২নং ওয়ার্ডে মুসলিম পাড়া কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে কেন্দ্রের ভোটা গ্রহন প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ থাকে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে ফাকা গুলি ছোড়ে। এতে করে মো: ইব্রাহিম নামে একজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের ফাকা গুলি তার ডান কানে আঘাত লেগেছে বলে জানা গেছে। আজীজ নগর ইউনিয়নে চাম্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইউপি সদস্য প্রার্থী উথোয়াইচিং মারমার সঙ্গে মো: জামালের হাতাহাতি হয়। এতে কিছু উত্তেজনা বিরাজ করে।

 

একই ইউনিয়নের আ’লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: জসিম উদ্দিনের হাতে মারধরের শিকার হয়ে আহত হন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো: নূরুর ছোপা মাষ্টার। মারধরের শিকার মো: নূরুর ছোপা জানান, জাল ভোটের প্রতিবাদ করায় মো: জসিম উদ্দিনসহ তার লোকজন আমার উপর চওড়া হয়ে মারধর করে। তবে মারধরের ঘটনায় আ’লীগ প্রার্থী জসিম উদ্দিন অস্বীকার করেছেন।

 

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো বড় ধরণের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। সকাল থেকে ভোটাররা সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে সুশৃঙ্খলভাবে ভোট প্রদান করেছেন। দোছড়ি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের দুইজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

 

সরেজমিনে শনিবার সকালের দিকে বান্দরবান সদর ইউনিয়নের লেমুঝিড়ি পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে মহিলাদের উপস্থিতি বেশী। তবে সময় গড়াতে দুপুরের দিকে পুরুষ ভোটারদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। রাস্তায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ টহল দেখা গেছে।এ কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৫৬০জন।

 

বিএনপি প্রার্থী মো: সরওয়ার জামানের এজেন্ট উবামং মার্মা জানান, ভোটাররা সুন্দরভাবে ভোট প্রদান করেছেন। কোনো ধরণের জাল ভোট প্রদান করা হয়নি।

 

এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো: জিয়া উদ্দিন জানান, ভোট প্রদানে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়নি। ভোটাররা সুন্দরভাবে নিজেদের ভোট নিজেরা প্রদান করেছেন।

 

অপর সদর ইউনিয়নের গোয়ালিয়া খোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানেও লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ভোটাররা। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের উপস্থিতি বেশ লক্ষীয় ছিল। এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মো: মঞ্জিল জানান, চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা ভোট কেন্দ্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে এমন অভিযোগ করেননি। সকাল থেকে ভোট দানের শেষ সময় পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

 

বান্দরবান সদর ইউনিয়নের আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাচপ্রু মারমা (সাবু) জানান, সুষ্ঠ-সুন্দরভাবে ভোট দিতে পেরেছেন ভোটররা। তবে বিএনপি’র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সরওয়ার জামান অভিযোগ করেছেন, কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে কিছু জাল ভোট পড়েছে।  এছাড়া পরিস্থিতি ভালো। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এর চেয়ারম্যান প্রার্থী পুকোয়াইমং মারমা বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন হয়েছে। এছাড়া লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া  সুয়ালক ইউনিয়নসহ অন্যাান্য ইউনিয়নে শান্তিপূর্নভাবে ভোট গ্রহনের খবর পাওয়া গেছে। 

 

সদর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, তার অধিনে সদর, সুয়ালক ও টংকাবতী ইউনিয়নে ভোট গ্রহন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এসব  কেন্দ্রে কোন জাল ভোট কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

 

জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, লামার সদর, আজীজ নগর ও ফাইতং ইউনিয়নে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নেও দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে হাতাহাতি ঘটনা ছাড়া আর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। 

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত