বুধবার রাঙামাটিতে পরিবার এবং সমাজে আদিবাসী নারীর প্রতি নির্যাতন ও প্রথাগত আইন শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।সেমিনারে বক্তারা বলেন, আদিবাসীদের প্রথাগত আইনও কোন না কোনোভাবে পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়াজালে বন্দি। প্রথাগত আইনের মধ্যে আদিবাসী নারীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন যা নারীর প্রতি নির্যাতনকে জিইয়ে রাখে। আদিবাসীদের জাতিগত সংকট নিরসনের পাশাপাশি অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী সমাজের সমস্যাগুলো নিরসন হওয়া অত্যন্ত জরুরী।বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা প্রোগেসিভ ও বালাদেশ নারী প্রগতি সংঘের যৌথ আয়োজনে জেলা ক্রীড়া সংস্থা সন্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত সেমিনারে প্রধান প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি আসনের নির্বাচিত সাংসদ উষাতন তালুকদার। প্রোগ্রেসিভের নির্বাহী পরিচালক সূচরিতা চাকমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন আদিবাসী ফোরামের পার্বত্যাঞ্চল শাখার সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। আলোচক ছিলেন নারী নেত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির সভাপতি জড়িতা চাকমা, আদিবাসী সংগঠক দীপায়ন খীসা ও হিমাওয়ান্টির নির্বাহী পরিচালক টুকু তালুকদার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা।স্বাগত বক্তব্যে রাখেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের উপ-পরিচালক শাহনাজ সুমি। উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক হরি কিশোর চাকমা হেডম্যান শান্তি বিজয়, নারী নেত্রী চঞ্চনা চাকমা, হেডম্যান এসোসিয়েসনের থোয়াই অং মারমা, নারী নেত্রী মনীষা চাকমা ও বিএনপিএস-এর সমন্বয়কারী দিলারা রেখা প্রমুখ। সেমিনারে হেডম্যান-কারবারী, নারী নেত্রীসহ জনপ্রতিনিধি ও মিডিয়া কর্মীরা অংশ নেন।মূল প্রবন্ধে আদিবাসী নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতন বন্ধ করতে ১২ দফা সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হল আদিবাসী নারীর সমঅধিকার সংরক্ষেনের লক্ষ্যে প্রথাগত আইন বিশ্লেষন করে যগোপযোগী করা ও তার লিপিবদ্ধ করা, নারীর প্রতি বৈষম্যমমূলক ও অমর্যাদাকর প্রথা ও রীতিনীতিগুলো বর্জন করা, সম্পত্তিতে আদিবাসী নারীর উত্তারিধকার নিশ্চিত করা, সম্পত্তির উপর আদিবাসী নারীর উত্তরাধিকার বিষয়ে সচেতনা গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহন, আদিবাসী সমাজে বিাহ রেজিষ্ট্রেশনের ব্যবস্থা প্রবর্তন, আদিবাসী পুরুষের বহু বিবাহ বন্ধ করার জন্য প্রথাগত আইনের বহ বিবাহ আইন নিষিদ্ধ করা, লিঙ্গ ভিত্তিক শ্রমবিভাজন কমিয়ে আনা, প্রথাগত প্রতিষ্ঠানে যোগ্যতার ভিত্তিতে নারীকে নিয়োগের অগ্রাধিকার, প্রথাগত সামাজিক আদালতের রায় এর যথাযথ প্রখিয়াকে রেকর্ড সংরক্ষন করা, সামাজিক বিচারে শুনানীতে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, আদিবাসী জনগোষ্ঠী ও সংগঠনের মধ্যে লিঙ্গ সংবেদনশীল কর্মসূচি গ্রহন এবং আদিবাসী নারীদের উপর সহিংসতা বন্ধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা।প্রধান অতিথির বক্তব্যে উষাতন তারলুকদার এমপি বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থেই প্রথাগত সামাজিক আদালতের রায় এর যথাযথ প্রক্রিয়ায় রেকর্ড সংরক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরী। তিনি আরও বলেন, রায় লেখা ও রেকর্ড সংরক্ষণের ব্যাপারে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাও প্রয়োজন। সামাজিক বিচারের শুনানীতে নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত দরকার।
–হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.