কাউখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জুয়েলকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ

Published: 14 Jan 2016   Thursday   

রাঙামাটির কাউখালী প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জুয়েলকে শারীরিক নির্যাতন ও মোটরসাইকেলসহ বাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার সালিশি বৈঠক হয়। বৈঠকে হামলাকারীরা দোষ স্বখিার করে ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

 

জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদররের রিক্সস্ট্যান্ড এলাকায় মাহফুজ ও মেহেদি হাসান দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার পথে একটি সিএনজি অটোরিক্সাকে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজি ড্রাইভারের সাথে বিতন্ডা শুরু হয়। মুহুর্তেই লোক জমায়েত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি বিশৃংখল হতে দেখে লোকজনের ভেতর এত জোড়ে গাড়ী চালানো ঠিক না বলায় মোটসাইকেল আরোহী দুজনই জুয়েলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।

 

পরে প্রেসক্লাব থেকে রাত আটটার দিকে জুয়েল পোয়াপাড়া বাড়ীর গেইটে পৌঁছানোর সাথে সাথে মাহফুজ ও মেহেদী তাদের ৫/৬ জন সহযোগী অতর্কিত পেছন দিক থেকে বাঁশের লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা করে। এতে জুয়েলের মোটরসাইকেল ভাংচুর ও তাকে হামলার চেষ্টায় চালায়। অবশ্যই তিনি দ্রুত ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেয়ায় প্রাণে রক্ষা পান।

 

এরপর হামলাকারীরা  জুয়েলের বড় বড় ইট ছুড়ে ঘরের চালা ও বেড়া ভাংচুর চালায়। এতে সন্ত্রাসীদের ছোড়া ইটের আঘাতে কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ ঘরের মূল্যবান জিনিষপত্রের ক্ষতিসাধন হয়। ভাংচুরের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।  ঘটনার খবর পেয়ে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আফিয়া আখতার ও থানার ওসি আব্দুল করিম ফোনে জুয়েলের খোজঁ নেন।

 

বিষয়টি নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই ফোনে কাউখালী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদ সদস্য অংসুইপ্রু চৌধুরী ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বিষয়টির যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মামলা দায়ের না করার অনুরোধ জানান জুয়েলকে।

 

সূত্র জানায়, গত ১৯ মার্চ রাতেও এই গ্রুপটি একইভাবে জুয়েলে বাড়িতে ভাংচুর চালালে অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে ২০ মার্চ কাউখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (নম্বর-৬৪৩) রুজু করেন। গত ২০ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় দায়িত্ব পালন করে আসা সাংবাদিক জুয়েল অভিযোগ করেন মূলত হত্যার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

 

এদিকে, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সালিশি বৈঠকে হামলাকারী মেহেদেী হাসান সানি ও মোঃ মাহফুজ দোষ স্বীকার করে পা ধরে ক্ষমা চায়। ভাংচুরের ক্ষতিপূরণেরও দায়িত্ব নেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার।

 

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কাউখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌচামং(এসএম) চৌধুরী, ইউএনও আফিয়া আখতার, থানার ওসি আব্দুল করিম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার, কাউখালী প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুল হক মাহবুব, সহসভাপতি ওমর ফারুক, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন।

 

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এরশাদ সরকার বলেন, যে ঘটনা ঘটে গেছে তার জন্য দলের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতে এধরণের ঘটনা আর ঘটবেনা ও ভাংচুরের ক্ষতিপূরণেরও দায়িত্ব নিচ্ছি। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন বলেন, মতপার্থক্য থাকলেও কারো উপরে ও বাড়িতে গিয়ে হামলার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

 

বৈঠকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চৌচামং(এসএম) চৌধুরী বলেন, রাজনীতির উর্দ্ধে আমরা মানুষ ও সামাজিক জীব। এধরণের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়। এতে করে দলের ও সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিয়া আখতার বলেন, ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কার জনক, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণে ঘটনার পুনরাবৃত্তির বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

 

থানার অফিসার উনর্চাজ আব্দুল করিম বলেন, যেটা হয়েছে সেটা অবশ্যই নিন্দনীয়। ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ ও এলাকার শান্তিশৃঙখলা স্থিতিশীল রাখতে উভয় পক্ষকে নিয়ে এই সালিশি বৈঠকের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত