বুধবার রাঙামাটিতে ছোট পরিবার ধারণার উন্মেষ, পুষ্টি, এএনসি, নিরাপদ প্রসব, পিএনসি ও নবজাতকের যত্ন বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম (তথ্য, শিক্ষা ও উদ্বুদ্ধকরণ) ইউনিটের আয়োজনে জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চম্পকনগরস্থ জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেগম সাহান ওয়াজ। বক্তব্য রাখেন ডাঃ বেবি ত্রিপুরা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম ইউনিটের প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রবীর কুমার সেন, রাঙামাটি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল, এফডব্লিউভিটিআই-এর অধ্যক্ষ ডাঃ রতন কুমার দে, রাঙামাটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক লেলিন তালুকদার। সঞ্চালক ছিলেন সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বিমল কান্তি চাকমা।
অনুষ্ঠানে কাউখালী, কাপ্তাই, লংগদু, রাঙামাটি সদর, রাজস্থলী, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ৪০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন কাপ্তাইয়ের সাংবাদিক কাজী মোশারফ হোসেন,লংগদুর বর্ষীয়ান সাংবাদিক এখলাছ মিয়া ,লংগদুর আরেক সাংবাদিক ওমর ফারুক মুছা প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিন বলেন, নবজাতকের পুষ্টির ঘাটতি সারাজীবনেও পূরণ করতে পারে না। তাই মা যেন যথাযথ যত্ন পায়, পুষ্টি পায় সেদিকে নজর দিতে হবে পরিবারকেই। কেননা ভালো মা-ই ভালো জাতি উপহার দিতে পারে। আর ভালো জাতি কেবল ভালো দেশ গড়ে তুলতে পারে।
তিনি আরও বলেন, প্রসবকালীন জটিলতা মা ও নবজাতকের জন্য ভয়ংকর ও প্রাণহানির সম্ভাবনা তৈরি করে। নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে। এজন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে।
নারী শিক্ষা ত্বরান্বিত করতেই ছাত্রী উপবৃত্তি চালু করা হয়েছে উল্লেখ তিনি বলেন, পরিবার শিক্ষিত হলে পারিবারিক অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। একই সাথে বাল্য বিবাহ বন্ধে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। নানা সূচকে বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। এটা ধরে রাখতে হবে। সচেতনতা এবং সঠিক সেবা পাওয়ার কারনে দিনদিন সবদিক দিয়েই মানুষ উন্নতি করছে।
জনসচেতনতা তৈরিতে গণমাধ্যম কর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণ মানুষের জানার অবাধ প্রবাহ হচ্ছে গণমাধ্যম। গণমাধ্যম কর্মীদের পরিশিলিত লেখনীই কুসংস্কার দূর করতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে জলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বেগম সাহান ওয়াজ কুসংস্কার দূর করতে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
ডাঃ লেলিন তালুকদার বলেন, এখনো পাহাড়ে প্রসুতি মায়েদের খাবারের বিষয়েও কুসংস্কার চালু আছে। এ কুসংস্কার দূর করতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করছে। প্রসব পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এখন মাতৃ মৃত্যুর প্রধান কারণ।
গর্ভবতী মায়েদের ঘুম, খাবার আর পায়খানা ঠিকমত হয় কিনা তা পরিবারের সদস্যদেরকেই লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা মানুষ হিসেবে পূর্ণ বিকাশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো “গোল্ডেন ১০০০ দিন”। যার ২৭০ দিন কাটে মাতৃগর্ভেই । সাম্প্রতিক চিকিৎসা বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, শীতকালে ৭ দিন আর অন্য সময়ে ভূমিষ্ট হওয়ার ৭২ ঘন্টা পর নবজাতককে গোছল করানো উচিত।
সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, নারীদের শিক্ষাই দারিদ্র বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ডাঃ রতন কুমার দে বলেন, সুষম খাবার আর পরিমিত শাররীক পরিশ্রম মানেই রোগহীন দীর্ঘায়ু জীবন। পরিবার পরিকল্পনার সুফলগুলো দেশবাসির কাছে তুলে ধরতে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.