ব্যাপক অনিয়ম,জাল ভোট,ব্যালট পেপার ছিনতাই, সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার মধ্য দিয়ে বুধবার রাঙামাটি পৌর সভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রতিপক্ষের হামলা ও ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ভূট্টো, এক কাউন্সিলর প্রার্থী ও পুলিশসহ ১২ জনের অধিক আহত হয়েছে। ভোট গ্রহনকালে পুলিশ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হলেও পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনের সময় রাঙামাটি পৌর সভা নির্বাচনে ২৮টি ভোট কেন্দ্রের অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রের বেশিরভাগ ভোট কেন্দ্রের সরকার দলীয় লোকজনেরা বহিরাগতদের দিয়ে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সকালের দিকে শান্তিপুর্ণভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হলেও দুপুরের দিকে জাল ভোট, জালিয়াতী, সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও এজেন্টদের বের করে দেয়া ঘটনা ঘটে।
শহীদ আব্দুল আলী একাডেমী ভোট কেন্দ্রে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় এক পুলিশ সদস্য, পুলিশের রোবার বুলেটে ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল মালেক, মোহাম্মদ দিদার,শাহ আলম আহত হয়। শাহ আলমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিকালের দিকে তবলছড়িস্থ বীর শ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গেলে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ভূট্টোর গাড়ীর ওপর হামলা করা হয়। এতে তাকে আহত অবস্থায় রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিকালের দিকে কাঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিজিবির লাঠিচার্জে হামলার শিকার হন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা ও তার প্রধান নির্বাচনী পোলিং এজেন্ট উদয়ন ত্রিপুরা।
ভোট গ্রহন শেষ হওয়ার এক ঘন্টার পূর্বে চম্পক নগরস্থ পিডিবি রেষ্ট হাউস কেন্দ্রে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সেখানে জাল ভোট দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় সরকারী দলীয় লোকজন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী এজেন্টকে বের করা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়া ভোট প্রদানের শেষ হওয়ার এক ঘন্টার পূর্বে সরকার দলীয় লোকজনেরা রাঙামাটি পৌরসভা কার্যালয় ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিড়ে নেয়ার ঘটনায় ১৫ মিনিট পর্ষন্ত ভোট গ্রহন স্থগিত করেন কেন্দ্রে দায়িত্বরত কর্মকর্তা। রাঙামাটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে জালভোটের দায়ে হেলাল উদ্দিন নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পনের দিনের জেল দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত।
বিএনপি মেয়র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ভূট্টো অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজন বাইরে থেকে লোকজন এনে ব্যাপক জালভোট দিয়েছে। প্রশাসনের লোকজন কয়েকজনকে আটক করলেও পরে আবার ছেড়ে দিয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সকাল থেকে গৌধুলী আমানতবাগ, আবদুল আলী একাডেমি, আল ফেসানি, পৌরসভা, কাঠালতলী, শিশু নিকেতন, সিনিয়র মাদ্রাসা, সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় কেন্দ্রে জালভোট দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে। প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
একই অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল আলম রবি ও ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা। তারা বলেছেন এ ধরনের ভোট জালিয়াতি একেবারে নজিরবিহীন। এটা কখনও মেনে নেয়া সম্ভব না। তবে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী আকবর হোসেন চৌধুরী বলেছেন শান্তিপুর্নভাবে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নৌকার জোয়ার দেখে তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা এ অভিযোগ করছে।
রাঙামাটি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৭জন এবং সংরক্ষিত ৭ জন ও সাধারন কাউন্সিলর পদে ৩৯ প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। মোটার রয়েছে ৫৯ হাজার ৪২ জন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.