কাপ্তাইসহ পার্বত্য অঞ্চলের গহিন অরণ্য এলাকা থেকে বিরল প্রজাতির হাসপা তক্ষক অবাধে পাচার হচ্ছে। এক একটি ৬০ গ্রাম ওজনের হাসপা তক্ষক ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে স্থানীয়ভাবে জানা গেছে।
অতিরিক্ত অর্থের লোভে একাধিক চক্র হাসপা তক্ষক সংগ্রহে স্থানীয় বনাঞ্চল ধাবড়ে বেড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে কাপ্তাইসহ পার্বত্য অঞ্চল থেকে অসংখ্য হাসপা তক্ষক পাচার হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। মূল্যবান হাসপা তক্ষক থেকে ইউরোনিয়াম সংগ্রহ করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
হাসপা তক্ষক দেখতে অনেকটা কুমির আকৃতির। দু’প্রকার হাসপা তক্ষকের একটি মাটি রঙ অপরটি কালো রঙের হয়ে থাকে। এরা গহিন জঙ্গলে গাছের কুঠুরীতে বসবাস করে। এরা বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। প্রাণিটির লেজ এস আকৃতির হলেও এটি সব সময় পেচানো থাকে। এর গায়ে বিভিন্ন স্থানে সাদা রঙের ফোটা দাগ রয়েছে। অন্ধকারে এ সাদা দাগগুলো ঝলতে থাকে এবং তা থেকে এক ধরণের আলোকরশ্মি বের হয়।
চিৎমরম এলাকার স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৬ মাস পূর্ব থেকে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন গহিন বনাঞ্চল থেকে মানুষ এ প্রাণীটি ধরা শুরু করে। এর সাথে স্থানীয় ও দেশের বিভিন্ন স্থানের একাধিক চক্র জড়িত রয়েছে। জীবিত একটি সর্বোচ্চ ৬০ গ্রাম ওজনের হাসপা তক্ষক স্থানীয়ভাবে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে স্থানীয় অনেকেই গহিন বনাঞ্চলে এ প্রাণী ধরতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
সূত্র আরও জানায়, রাঙামাটি-চট্টগ্রাম ও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম সড়ক হয়ে হাসপা তক্ষক ভারত, চীন, জাপান সহ বিভিন্ন দেশে চড়া মূল্যে বিক্রি করা হয়। বিদেশে নিয়ে হাসপা তক্ষককে নির্দিষ্ট উপাদান সমৃদ্ধ একটি ইনজেকসন পুশ করা হয়।
এভাবে তক্ষকটিকে দু’মাস রাখার পর তার শরীরে ইউরোনিয়াম উৎপাদন হয়। পরবর্তীতে এসব ইউরোনিয়াম সংগ্রহ করা হয় বলে সূত্র দাবী করে। প্রসঙ্গত, কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে তক্ষক ছাড়াও লজ্জাবতী বানর, পেঁচা, বেজী সহ অন্যান্য বন্য প্রাণি পাচার হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে গত ২২ ডিসেম্বর কাপ্তাই বনরেঞ্জের কর্মকর্তার কার্যালয়ে রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহজাহান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এপ্রাণী কখনো দেখিনি।
তিনি আরও বলেন, পাচার রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি এব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিক সহ সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই সহ পার্বত্য এলাকা থেকে তক্ষক (গুই সাপ আকৃতির তক্ষক যা বনজঙ্গল এবং পরিত্যক্ত বাসাবাড়ী, স্কুল, কল-কারখানায় থাকে) পাচার কালে একাধিক ব্যক্তিকে আটক করার ঘটনাও ঘটেছে ইতিমধ্যে। আর এসব তক্ষক থেকে যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরী করা হয় বলে জানা গেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.