আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়ায় নির্যাতনের শিকার এক কিশোরীর আইনি ও মানবিক সাহায্যার্থে বেসরকারী উন্নয়ন গ্রীনহীলের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
গ্রীন হিলের শিখা প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আইনজীবি আহমেদ তাসনিম আলমের প্রেরিত এক প্রেস বার্তায় বলা হয়, গ্রীন হিলের শিখা প্রকল্পের আয়োজনে রোববার সংবাদ সম্মেলনে গ্রীন হিল শিখা প্রকল্পের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক আইনজীবি আহমেদ তাসনিম আলম, কার্যক্রম সমন্বয়কারী রিকো খীসা এবং সমন্বয়কারী কুশল চাকমা।
সংবাদ সন্মেলনে বলা হয়, পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়েটি (১৪)বাবা মারা যাওয়ার পর একমাত্র অভিভাবক দিনমজুর মা ছিরলুক বেগম (৪২) এর সাথে আপন মামাতো ভাই নির্যাতনকারী শামশুল আলম (৩৫) এর বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল। তার মাকে রোজগারের জন্য সারাদিন বাড়ীর বাইরে থাকতে হয়। এ সুযোগে একদিন নির্যাতনকারী শামশুল আলম ২০১৩ সালে ডিসেম্বর মাসের সন্ধ্যা বেলা মেয়েটিকে একা পেয়ে নির্যাতন করে। এভাবে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে কয়েকদফা নির্যাতন চালায়। পরবর্তীতে মেয়েটি অন্তঃস্বত্তা হওয়ার খবর জানাজানি হলে মা-মেয়ে উভয়কে নির্যাতনকারীর নিজ বাড়ী থেকে বের করে দিলে বসত ভিটাহীন অসহায় মেয়েটির আশ্রয় হয় জনৈক ব্যক্তির গোয়াল ঘরে।
সংবাদ সন্মেলনে আরও বলা হয়, ছাত্রীটির মা অনেক তদবিরের পর আলীকদম থানায় ধর্ষক শামশুল আলমকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। ২৫ এপ্রিল আলীকদম থানায় করেন(মামলা নং-৮।। মামলা দায়ের করার পরও অভিযুক্ত আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি।পরবর্তীতে ২৫ আগষ্ট স্কুল ছাত্রীটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি ছেলে শিশুর জন্ম দেয়। তাছাড়া পুলিশ কর্র্তৃক বিজ্ঞ আদালতে চার্জশীট(নং-৩৯, তাং-০৭/০৯/২০১৪) প্রদান করলেও এখনো পর্যন্ত কোন সুরাহা হয়নি। বর্তমানে স্কুল ছাত্রীটির দিনমজুর মা কাজ করতেও অক্ষম। ছাত্রীটি তার মায়ের সাথে অর্ধাহারে অনাহারে কোলের শিশুটিকে নিয়ে অত্যন্ত মানবেতর জীবন-যাবন করছে। তাদের থাকার জন্য নিজস্ব কোন বাড়ী না থাকায় এখন নয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর রফিকুল ইসলামের বাড়ীতে কোনরকমে আশ্রিতা হিসাবে রয়েছেন। এদিকে অন্তঃস্বত্তা ও সন্তান প্রসবের পর ছাত্রীটির পড়ালেখাও ইতি ঘটেছে। থানায় মামলা হলেও পরবর্তী আইনি কার্যক্রম চালাতে তারা অক্ষম।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আয়োজকরা জানান,চার্জশীট আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পর নির্যাতিত ছাত্রীটিকে ডিলাক এর প্যানেল আইনজীবির মাধ্যমে বিচারিক আদালতে আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্যাতিত পরিবারকে আবাসন সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করা হবে। পাশাপাশি গ্রীন হিল শিখা প্রকল্পের পক্ষ থেকে মানবিক সাহায্যার্থে এককালীন কিছু পরিমাণ অর্থও প্রদান করা হবে বলে আয়োজকরা জানান।
সংবাদ সন্মেলনে স্কুলছাত্রীর ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে ও মানবিক সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মিডিয়া, জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট আবেদন জানানো হয়।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.