টানা ভারী বর্ষনে বৃহস্পতিবার বান্দরবান শহরের নিউ গুলশান এলাকায় পাহাড় ধসে এক শিশু নিহত ও একজন আহত হয়েছে। গুরুতর আহতকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে বর্ষনের কারণে বান্দরবান জেলা সদরের সাথে রুমা ও থানচি উপজেলা এবং রাঙামাটির সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষনে বৃহস্পতিবার সকালের দিকে বান্দরবান শহরের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত নিউগুলশান এলাকায় সদর হাসপাতালের পেছনে দ্বীনুল হক চৌধুরীর বসত ঘরের উপর হঠাৎ পাহাড় ধসে পড়ে। এসময় মাটি চাপা পড়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী,সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে চারজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করলেও দ্বীনুল হকের দেড় বছরের সাজিদুল হক চৌধুরীর মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। আহতরা হলেন গৃহকর্তা দ্বীনুল হকের স্ত্রী নিলু আক্তার(২৫)দুই মেয়ে সানজিদা(১০) ও তানজিলা(৬) এবং শাশুড়ী শৈমে মার্মা(৭০) আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় শৈমে মার্মাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ১০ হাজার ও জেলা প্রশাসক ২৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, বান্দরবানের সেনা বাহিনীর রিজিয়ন কমান্ডার নকিব আহাম্মদ চৌধুরী,জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুল হক চৌধুরী এবং পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন। এসময় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের নিকট পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর নগদ ১০ হাজার এবং জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুল হক চৌধুরী ২৫ হাজার টাকা প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের কারণে এ প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ের পাদদেশে বসতিদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের নিচে এবং নদীর পাড়ে ঝুকিপুর্ন বসবাস না করা ভাল। বর্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথে এসব ঝুকিপুর্ন বসবাসকারীদের জান এবং মাল রক্ষার্থে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা ভারী বর্ষনের কারনে জেলা সদরের বনরুপা পাড়া,হাফেজ ঘোনা,বাসষ্টেশন,কালাঘাটা এবং বালাঘাটা এলাকায় ব্যাপক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে নয় মাইল নামক স্থানের প্রধান সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়ায় বান্দরবান জেলা সদরের সাথে রুমা ও থানচি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ আবারও বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের পাইন ছড়া এলাকা বেইলি ব্রীজ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রাঙামাটির সাথে বান্দরবানে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। প্রবল বর্ষনে সাংগু ও মাতামহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.