বাংলাদেশের দার্জিলিং বলে খ্যাত পার্বত্য বান্দরবানে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। হোটেল, মোটেল ও কটেজগুলোতে সব রুম বুকড রয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পর্যটন স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা গেছে, ঈদের ছুটি উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশের দার্জিলিং বলে খ্যাত পার্বত্য বান্দরবানে পর্যটকরা ছুটে আসছেন। ঈদের দ্বিতীয় দিন বৈরী আবহাওয়ার জন্য পর্যটকের আগমন কম হলেও সোমবার সকাল থেকে শহরের নিকটবর্তী স্বর্ণজাদি, নীলাচল, শৈল প্রপাত ও মেঘলা পর্যটন স্পটে পর্যটকের ঢল নেমেছে। অনেক পর্যটক ট্রাক ভাড়া করে ট্রাকের উপর সাউন্ড বক্স লাগিয়ে গান ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরে বেরিয়েছেন। তবে শহর থেকে দূরে পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা কম রয়েছে। ঈদের ছুটিতে ঈদ আনন্দ করতে আসা পর্যটকরা যেমন মুগ্ধ হয়েছে এখানকার অপরূপ প্রাকৃতির সৌন্দর্যে। তেমনি খুশি হয়েছে পর্যটন শিল্পে সংশ্লিষ্ট হোটেল মালিক, গাড়ির চালক ও দোকানদারেরা। অধিক সংখ্যক পর্যটক হওয়াতে বেচা বিক্রিও বেড়েছে। আবার অনেক পর্যটক এখানকার ব্যবস্থাপনা দেখেও কিছুটা হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অনেক পর্যটক অভিযোগ করেছেন কয়েকমাস আগে নীলাচলে ঘুরতে এসেছিলেন। তখন টিকিটের মূল্য ছিল ৩০টাকা। বর্তমানে ৪০ টাকা করা হয়েছে। তার উপর ১৫ পার্সেন্ট ভ্যাট যোগ করে মোট ৪৬টাকা টিকিটের মূল্য দিতে হয়েছে। অথচ অবকাঠামো আগের চেহারায় রয়েছে। তারা আরও জানান,এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন বেশ কাড়ে। মেঘলা ও নীলাচল সরকারি সংস্থার অধিনে না হয়ে বেসরকারি হাতে ন্যস্ত হলে অবকাঠামো থেকে শুরু করে এর চারপাশ আরও সুন্দর করে সাজানো থাকতো।
বগালেকের একটি কটেজের মালিক লাল রাম বম জানান, বর্ষাকালে বগালেকে পর্যটক তেমন একটা আসে না।
নীলাচলের পর্যটন কেন্দ্রে দোকানদার রূপতি তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সোমবার পর্যটক অনেক বেশি এসেছে। এই কারণে বিক্রিও বেশ ভালো হচ্ছে। পর্যটক না আসলে আয় রোজগার তেমন হয় না। গাড়ির চালক হারুন ও জসিম বলেন, ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন পর্যটক তেমন আসেনি। ঈদের তৃতীয় দিন থেকে পর্যটকের ঢল নেমেছে। পর্যটক থাকলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। কিছু আয় রোজগার হয়। গ্রীন হিল হোটেলের ম্যানেজার আশীষ কুমার ধর বলেন, ঈদের দিন থেকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে পর্যটকের দেখা যায়নি। আবহাওয়া ভালো হওয়াতে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। ১৭টি রুমের সবকটি ভাড়া হয়ে গেছে। সোম, মঙ্গল, বুধবার পর্যন্ত কোনো রুম খালি নেই।
বান্দরবান হোটেল, মোটেল, কটেজ, রেষ্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিনে প্রায় ৬০ ভাগ রুম বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের তৃতীয় দিন অর্থাৎ গতকাল সোমবার থেকে প্রায় শতভাগ রুম ভাড়া হয়ে গেছে। সমিতির অধিনে ৪৫টি ছোট-বড় হোটেল, মোটেল ও কটেজগুলোতে তিন হাজার লোকের রাত যাপনের ব্যবস্থা আছে।
জেলা প্রশাসনের নেজারত শাখার ডেপুটি কালেক্টর মো: শামীম হোসেন বলেন, রোববার ও সোমবার মিলিয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার পর্যটক এসেছে। নির্মাণ ব্যয় ও ষ্টাফ সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে টিকিটের মূল্য বাড়ানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ঈদের ছুটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যটন স্পটগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.