কাপ্তাইয়ে আম্রপালির বাম্পার ফলনেও চাষির মুখে হাসি নেই

Published: 27 Jun 2015   Saturday   

রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে আম্রপালির অধিক ফলন হওয়া সত্বেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। কাপ্তাই উপজেলার ৫ ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় আম্রপালি আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। নানা প্রতিকূলতা স্বত্বেও বাগানে অধিক ফলন হওয়ার পরও ব্যক্তি মালিকানায় সৃজিত আম বাগানের মালিকরা নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় বাজারে আম্রপালিতে সয়লাভ হয়ে গেছে। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি আম্রপালির মূল্য ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছর স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি আম্রপালি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পাহাড়ি জমিতে গত ১০-১২ বছর ধরে সুস্বাদু আম্রপালি, রূপালি আমের চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু অধিক স্বাদের কারণে অধিকাংশই আম্রপালি চাষের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। উপজেলার রেশম বাগান এলাকার ডাঃ রহমত উল্যা জানান, রেশম বাগান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়ে প্রায় ৫ একর পাহাড়ি জমিতে আম্রপালির বাগান সৃজন করেন। বাগানে প্রায় ৩শ টি আম গাছ রয়েছে। এসব গাছের বয়স প্রায় ৮ বছর। চলতি বছর বাগান পরিচর্যায় প্রায় ৫০ হাজার টাকার উর্ধ্বে ব্যয় হয়েছে। কারণ যথা সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বাড়তি পরিচর্যা করতে হয়েছে। সময় মতো বৃষ্টি হলে আমের ফলনও আরও বেশি হতো। তিনি বলেন, ৩শ গাছে প্রায় ৩ টন আম পাওয়া যাবে। কিন্তু অধিক ফলনের কারণে যে পরিমাণ অর্থ আয় করার আশা ছিল, তা হবে না। তিনি আরও বলেন, বাগানের আম বিক্রি করে এবার  সাড়ে ৩ ধেতে ৪ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু সর্বসাকুল্যে ১ থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব হবে না।

উপজেলার সাপছড়ি, বড়ইছড়ি পাড়া, শীলছড়ি, ব্যাঙছড়ি ফুইট্যা ছড়ি, নোয়াপাড়া, রাইখালীসহ অন্যান্য এলাকারয় আমের বাম্পার ফলনেও কৃষকরা প্রকৃত মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন। ডাঃ রহমত উল্যার মতো ব্যক্তিগত উদ্যোগে সৃজিত বাগান মালিক আপাই মারমা, মাকসুদুর রহমান মুক্তার, অরুন তালুকদার, আব্দুর রশিদ, ডাঃ এস এ চৌধুরী চলতি বছর আম্রপালি আম চাষ করে অনেকটা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে স্বক্ষম হবেন বলে আশা করেছেন। কিন্তু তাদের সে আশায় গুড়েবালি। বেশি উৎপাদন হলেও চাষীরা আমের সঠিক দাম পাচ্ছেন না।

আম চাষিদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, প্রতিটি আমগাছ থেকে আম পাড়ার সময় এখন। এসময় টানা বর্ষনে আমগুলোতে এক জাতীয় পোকার আক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পোকা আক্রমণে অধিকাংশ আম ফেটে যাচ্ছে। এতে প্রচুর আম ফেলে দিতে হচ্ছে।  এতেও চাষীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবে আম্রপালির বাম্পার ফলন হওয়ায় ভোক্তা সাধারণ বেজায় খুশি। কারণ অল্প দামে তারা প্রচুর আম কিনতে পারছে। এ এলাকায় ফরমালিন মুক্ত  আম্রপালি পাওয়া যায় বিধায় শহর থেকে এসে অধিকাংশ মানুষ মধুুুু মাসের বিভিন্ন মৌসুমে ফল কিনে নিয়ে যায়। তবে কয়েক জন চাষি আক্ষেপ করে বলেন, কাপ্তাইসহ পার্বত্য এলাকায় যে পরিমাণ মৌসুমী ফল উৎপাদিত হয়। তা থেকে চাষিরা কাঙ্খিত মূল্য কখনও পায় না। কারণ এসব মৌসুমী ফল সংরক্ষণের জন্য পার্বত্য এলাকার কোথাও কোন হিমাগার না থাকায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার মৌসুমী ফল নষ্ট হয়ে যায়।

--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

 

 

 

 

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত