টানা বর্ষনে রাঙামাটির জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বর্ষনের ফলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, চার দিনের টানা বর্ষনে ফলে রাঙামাটি শহরের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত ৩০ হাজারেরও বেশী লোকজন ঝূঁকিপূর্ন অবস্থায় রয়েছেন। এসব লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যেতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জানা গেছে, চার দিনে টানা বর্ষনে রাঙামাটিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরী কাজ ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তবে নিম্ন আয়ের লোকজন পড়েছেন চরম বেকায়দায়। টানা বর্ষনের ফলে জেলার নদ-নদীর গতি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনো বর্ষনের ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, টানা বর্ষনের ফলে রাঙামাটি শহরের ৩২টি স্পটে পাহাড়ের পাদদেশে ৩০ হাজারেরও বেশী লোকজন অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করে ঝূঁকিপূর্ন অবস্থায় বসবাস করছেন। তবে ঝুকিঁপুর্ণ এলাকা থেকে সরে যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে জেলা প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কার্যালয় জানায়, রাঙামাটি শহরের পাহাড়ের ঢালে বা পাদদেশে ঝুকিপুর্ণ অবস্থায় বসবাসীদের সংখ্যা নিয়ে ২০১৩ সালে একটি জরিপ করা হয়। এতে শহরের ৯টি ওয়ার্ডের ৩২টি ঝুকিপুর্ণ এলাকায় ৫৬৮টি পরিবারকে ঝুকিপূর্ন তালিকায় চিহিৃত করে দুর্যোগকালীন সময়ে ১০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রের তালিকা করা হয়। তবে এসব তালিকা তিন বছর আগে করা হলেও নতুন করে ঝুর্কিপূর্ন স্থান চিহিৃত করা হয়নি। চিহিৃত ঝুকিপূর্ণ স্পটগুলো হল, রির্জাভ বাজারের এসপি অফিস সংলগ্ন এলাকা, শহীদ আব্দুল একাডেমী সংলগ্ন ঢাল, চেংগি মূখ এলাকা, মাতৃমঙ্গল এলাকা, পুলিশ লাইন স্কুল সংলগ্ন ঢাল, অফিসার্স কলোনী ঢাল, এডিসি হিল সংলগ্ন রাস্তা, ওয়াপদা কলোনী বিএডিসি পাহাড়ের ঢাল, দুর্নীতি দমন অফিসের ঢাল,দেওয়ান পাড়া পাহাড়ের ঢাল, কিনারাম পাড়া পাহাড়ের ঢাল, সিলেটি পাড়া পাহাড়ের ঢাল, আলুটিলা পাহাড়ের ঢাল, স্বর্নটিলা পাহাড়ের ঢাল, রাজমনি পাড়া পাহাড়ের ঢাল, মুসলিম পাড়া পাহাড়ের ঢাল,পোষ্ট অফিস কলোনী পাহাড়ের ঢাল, নতুন পাড়া পাহাড়ের ঢাল, রেডিও স্টেশনের পাশের শিমুলতলী পাহাড়ের ঢাল, লোকনাথ মন্দির পাহাড়ের ঢাল, আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, কাঠালতলী মসজিদ কলোনী, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংলগ্ন পাহাড়ের ঢাল, আলম ডক পাহাড়ের ঢাল, গর্জনতলী মুখ, চম্পক নগর পাহাড়ের ঢাল, পাবলিক হেলথ পাহাড়ের ঢাল, আমানতবাগ পাহাড়ের ঢাল, জালালাবাদ কলোনী পাহাড়ের ঢাল ও মুজিব নগর পাহাড়ের ঢাল।
পরিবেশবিদদের মতে, রাঙামাটি শহরটি উচু নিচু পাহাড়ী ঢিলা হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী বাড়িঘর নির্মাণ করা যেতো। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মানের কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা এসব লোকজন ঝূকিপূর্ন অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। বিশেষ করে প্রতি বর্ষা মৌসুমের সময় টানা বর্ষণ হলে মাটি নরম হয়ে গিয়ে মাটি ধসের আশংকা থাকে। তাই পাহাড়ের পাদদেশে এসব অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করা বন্ধ করা প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন বলেন, পাহাড় ধসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশংকায় ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে সরিয়ে উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে চলতি বছর ঝুঁকিপূর্ণ লোকজেনর তালিকা এখনও নিরূপন সম্পন্ন হয়নি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.