বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আদিবাসী রেংনী মুরুং এর জায়গা জবর দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে। তবে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অভিযোগটি সম্পুর্ন মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণীত ও ভিত্তিহীন। সরই মৌজায় কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নামে কোন জায়গাও নেই।
এদিকে, ৬ মে উপজেলার সরই ইউনিয়নের কালামিয়া পাড়া এলাকার টম্না মুরুং এর ছেলে রেংনী মুরুং বাদী হয়ে তার ৩০১ নং সরই মৌজার হোল্ডিং নং- ৫৪ এর ৪ একর জায়গা কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কর্তপক্ষ জবর দখল করে নেওয়া জায়গা ফিরে পেতে লামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়,কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ম্যানাজার আনোয়ার আল হক কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজের নামে তার চার একর জায়গা দখল করে তাকে উচ্ছেদ করেছে। উপজেলা চেয়ারম্যান অভিযোগটি সরই মৌজার হেডম্যানকে সঠিক তদন্ত পূর্বক নিষ্পত্তি করে তাকে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্থ রেংনী মুরুং অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি আইনি সহযোগীতা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বান্দরবানের কাছে আরেকটি অভিযোগ দিয়েছেন। তাছাড়া উক্ত জায়গায় তার রোপিত একাশি, ম্যালেরিয়া, আকাশমনি ও রাবার গাছগুলো কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ম্যানাজার আনোয়ার আল হক লোক দিয়ে কেটে ফেলেছেন তিনি অভিযোগ করেন।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, বান্দরবানের লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৩০১ নং সরই মৌজার কোয়ান্টাম কসমো স্কুল এন্ড কলেজ বিভিন্ন পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের জায়গা কৌশলে দালালের মাধ্যমে ভূয়া লোক দিয়ে একজনের জায়গা অন্য জনের মাধ্যমে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে শত শত একর ভূমি দখলে নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এ দলটি কৌশলে স্থানীয়দের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র ও নীল নকশা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন বান্দরবান জেলার সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ কোয়ান্টাম সম্পর্কে বিভিন্ন অনিয়ম ও ভূমি জবর দখলের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক।তারা ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী মহলের মদদপুষ্ট হওয়াই এবং স্থানীয় প্রশাসন তাদের পক্ষ অবলম্বন করাই তাদের অনিয়মগুলো ধামাচাপা পড়ে যায়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কোয়ান্টাম একটি মহৎ ও সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। কেন তাদের শত শত একর জায়গা প্রয়োজন ? এতে করে সর্ব মহলে প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় ভাবে কোয়ান্টামের কর্মকান্ড, আয়ের উৎস এবং তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে তিনি সরকারের কাছে দাবী জানান।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয়রা জানান, কোয়ান্টামের সকল কার্যক্রম গোপনীয়তা বজায় রেখে চলছে। তাদের কর্মকান্ডে স্থানীয় জনগণের কোন সম্পৃক্ততা নেই।তবে প্রতিদিন শত শত বহিরাগত দেশী বিদেশী লোক দামী গাড়ী নিয়ে আনাগোনা ও গোপন বৈঠক করে থাকে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন জনগণ।
ভূমি জবর দখলের বিষয়ে সরই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দিন বলেন, রেংনী মুরুং এর জমি দখলের বিষয়ে তিনি অবগত রয়েছেন।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন (সরই, লামা) ম্যানাজার আনোয়ার আল হক মুঠোফোনে তিনি জানান, অভিযোগটি মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রণীত ও ভিত্তিহীন। সরই মৌজায় তাদের (কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন) নামে এক শতক জায়গাও নেই। বর্তমানে তিনি ঢাকায়। তাই বেশী কিছু বলা যাচ্ছে না।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.