১৮ মে মধ্যরাত থেকে কাপ্তই হ্রদ মাছ আহরনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ

Published: 05 May 2015   Tuesday   

১৮ মে মধ্যরাত থেকে অনির্ষ্টিকালের জন্য কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু প্রজনন বংশ বৃদ্ধি, মজুদ এবং ভারসাম্য রক্ষার্থে হ্রদে সকল প্রকার মৎস্য আহরণ ও পরিবহন উপর নিষেধাজ্ঞা জারির হচ্ছে।

 

রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সোমবার কাপ্তাই হ্রদ পরিচালনা সংক্রান্ত এক সভায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

জেলা প্রশাসক মোঃ সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন এর রাঙ্গামাটি কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মাঈনুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তফা জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শহীদুল্লাহ, জেলা পরিষদ সদস্য সাধন মনি চাকমা, জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য মনিরুজ্জামান মহসিন রানা, চেম্বার সম্পাদক মোঃ আবুল কাশেম, কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা হারুনুর রশীদ, মোঃ শাহআলম, মুজিবুর রহমান, আব্দুস শুক্কুর বক্তব্য রাখেন।


সভায় কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন বিষয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষনা ইনস্টিটিউট, রাঙ্গামাটি নদী উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ আবুল বাশার ।
সভায় মৎস্য গবেষনা েেকন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান কাপ্তাই হ্রদে কার্প প্রজাতি মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করার জন্য ডিম ছাড়ার মৌসুম মাছ ধরা বন্ধ রাখা প্রয়োজন। তিনি জানান কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান। এই হ্রদে প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রাকৃতিক প্রজনন কৃত মাছের মধ্যে শতকরা ৩১ ভাগ কাতাল, শতরা ১২ ভাগ রুই, শতকরা ৭ ভাগ মৃগেল এবং শতকরা ৫১ ভাগ কালিবাউশ এর প্রজনন হয়। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে আসছে।

 

সভায় জানানো হয়, চলতি মাছ ধরা মৌসুমে এপ্রিল ২০১৫ সাল পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদ হতে ৮হাজার ১ শত ৭৮ মেট্টিকটন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ অহরন করা হয়েছে এবং মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন আহরিত মাছের উপর রয়েলটি বাবদ ৮ কোটি ৭৯ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় করেছে।পাশাপাশি স্থাণীয় বাজার গুলোতে রয়েলটি ছাড়াই জেলেরা মাছ বিক্রির সূযোগ পেয়েছে।

 

সভায় আরও জানানো হয় গত বছর মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্ভরশীল ১৮ হাজার ৯শত ৬০ জন জেলেকে মাস প্রতি ২০ কেজি করে ৩ মাসের জন্য খাদ্য শষ্য প্রদান করা হয়েছে। চলতি মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে হ্রদের উপর নির্ভরশীল ১৯ হাজার ১ শত ৫৯ জন জেলেকে মাস প্রতি ৪০ কেজি করে ৩ মাসের জন্য খাদ্য শস্য বরাদ্দ প্রদানের জন্য মৎস্য এবং প্রাণী সম্পদ এবং দূর্যোগ মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাব প্রেরন করা হয়েছে।

 

সভায় মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বছর মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন স্থানে এবং হ্রদের অভায়রন্য সমূহে ২৩ মেট্টিক টক কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। বর্তমানে কর্পোরেশনের উদ্যোগে জেলার লংগদু উপজেলায় একটি হ্যাচারী নির্মানের কাজ চলছে এবং প্রায় ৫০ একর পানিতে নার্সারী স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে আগামীতে কাপ্তাই হ্রদে অধিক পরিমানে কার্প জাতীয় মারে পোনা অবমুক্তকরন সম্ভব হবে।

 

সভা সূত্রে জানা গেছে,মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে অবৈধ উপায়ে মাছ আহরন বন্ধ এবং পরবহন ও বাজার জাত করন বন্ধ কল্পে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে কোস্ট গার্ড মোতায়ানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মাছ ধরা বন্ধ মৌসুমে হ্রদ অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.

উপদেষ্টা সম্পাদক : সুনীল কান্তি দে
সম্পাদক : সত্রং চাকমা

মোহাম্মদীয়া মার্কেট, কাটা পাহাড় লেন, বনরুপা, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা।
ইমেইল : info@hillbd24.com
সকল স্বত্ব hillbd24.com কর্তৃক সংরক্ষিত