পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সোমবার বিলাইছড়িতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আয়োজনে উপজেলা শিল্প কলা একাডেমীতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গুনেন্দু বিকাশ চাকমা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীরোত্তম তঞ্চঙ্গ্যা`র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় তঞ্চঙ্গ্যা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান, রামাচরণ মার্মা ( রাসেল), সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অমৃতসেন তঞ্চঙ্গ্যা (পুরুষ) ও উৎপলা চাকমা ( নারী), হেডম্যান নির্মল তঞ্চঙ্গ্যা প্রমূখ। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটির সেক্রেটারী টিপু চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ বিলাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি নিকেল চাকমা। সমাবেশের আগে সকালে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের অংশ গ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি উপজেলার পল্টন ঘাট থেকে শুরু করে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে, শিল্পকলা প্রাঙ্গণে গিয়ে সমাপ্ত হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে গুনেন্দু বিকাশ চাকমা বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আজকের এই দিনে জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এবং বাংলাদেশ সরকারের উভয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত যে সমঝোতা চুক্তিটি হয়েছিল, সেটি ছিল শান্তির সনদ। উভয় পক্ষের শপথ সেখানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আজকে ২৭ বছরে এসে আমরা কি শান্তি বা বোঝাপোড়া দেখতে পাচ্ছি? সেই যে শপথের অঙ্গীকার কারা ভঙ্গ করছে জেএসএস নাকি রাষ্ট্রযন্ত্র? ।
তিনি আরো বলেন,২৭ বছরের মাঝে আমরা কি দেখতে পেয়েছি আদিবাসী সম্পর্কে যে বিতর্ক সরকার এবং প্রান্তিক জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে, যারা বিলুপ্তি হলে চলেছে, যাদের অস্তিত্ত্ব রক্ষার সংকট হতে চলেছে, সেই অস্তিত্ত্বের সংকট থেকে উত্তোরনের জন্য চুক্তি বাস্তবায়ন যে জরুরী সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। চুক্তির শর্তানুযায়ী জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ ও পার্বত্য চর্ট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হলেও সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা প্রদান করা হয়নি। কথা ছিল জেলা পরিষদ নির্বাচন না হওয়া পর্য়ন্ত ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দিয়ে পরিচালনা করা হবে। কিন্তু তারা চুক্তি ভঙ্গ করে অনির্বাচিত ১৫ সদস্য কমিটি গঠন করে জেলা পরিষদ পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি চুক্তি বিরোধী একটি পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন করার কথা বলছে। কিন্তু চুক্তিতে কি আছে স্থানীয় বাসিন্দাদের দিয়ে একটি ভোটার তালিকা প্রনয়ন করে জেলা পরিষদ নির্বাচন করার কথা থাকলেও সেই ভোটার তালিকা প্রনয়ন না করার ফলে জেলা পরিষদ নির্বাচন করা হচ্ছেনা। তাই আঞ্চলিক পরিষদ এর নির্বাচনও করা যাচ্ছে না। আমরাও চাই গনতান্ত্রিক পন্থায় উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে গঠন করা হোক। তবে সেটি চুক্তির শর্তানুযায়ী হতে হবে। তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা যেহেতু জনগণের স্বার্থে চুক্তি করেছি, তাই শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও আমরা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাবো। আমরা বর্তমান সরকারকে বলবো আপনারা যদি শান্তি চান, দেশের উন্নতি চান , পার্বত্য চট্টগ্রামের জম্মজনগণকে যদি পাশে পেতে চান তাহলে অনতিবিলম্বে চুক্তি বাস্তবায়ন করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.