দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি ২৯৯নং আসনের বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী অমর কুমার দে সমর্থক কিংবা নেতাকর্মীরা পাশে না থাকলেও একা একা নির্বাচনী প্রচারনা প্রচারনাসহ তিনি নিজেই পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছেন। জেলা শহর থেকে উপজেলায় আবার গ্রামে গ্রামে কিংবা হাট বাজারে গিয়ে একাই ভোটারদের কাছ থেকে চাইছেন ভোট প্রার্থনা। তার এ ব্যতিক্রম প্রচার-প্রচারনা নিয়ে পুরো রাঙামাটি জেলা আসনের ভোটাররা বেশ উপভোগ করছেন।
এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে দশ উপজেলার মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৪ জন(পুরুষ- ২লাখ ৪৭ হাজর ১৬ জন ও ও মহিলা-২লাখ ২৭ হাজার ৩৮ জন)। মোট কেন্দ্র রয়েছে ২১৩টি । এর মধ্যে এবার ১২৯টি হচ্ছে গুরুত্বপুর্ন কেন্দ্র ও সাধারন কেন্দ্র হচ্ছে ৮৪টি। এবার দুর্গম এলাকায় ১৮টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আনা নেয়া হবে।
এবার নির্বাচনে এ আসনে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন, আওয়ামীলীগের নৌকা প্রার্থী দীপংকর তালুকদার,বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী অমর কুমার দে ও তৃণমুল বিএনপি প্রার্থী মিজানুর রহমান। তবে প্রার্থীদের মধ্যে দীপংকর তালুকদারের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য কোন হেভিওয়টে প্রার্থী না থাকায় তার দখলে এখল নির্বাচনী মাঠ। ইতোমধ্যে তিনি দশ উপজেলার সবকটি উপজেলায় গিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা, পথ সভা শেষ করেছেন।
এদিকে, অপর প্রার্থী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী অমর কুমার দে একা একা নির্বাচনী প্রচারনা প্রচারনাসহ নিজেই পোস্টার লাগাচ্ছেন, লিফলেট বিতরণ করছেন। তিনি নিজেই লাগাচ্ছেন লিফলেটও। প্রচারণার সময় তাঁর সঙ্গে কোনো সমর্থক বা কর্মীকে দেখা যাচ্ছে না। তিনি একাই বিভিন্ন দোকানে, পথচারী, হাটবাজারে ভোটারদের কাছে লিফলেট বিতরণ করছেন।
অমর কুমার দে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপপ্রচার সম্পাদক। এছাড়া রাঙামাটি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও প্রচার সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অমর কুমার দে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে কেন্দ্রীয় হিন্দু ফেডারেশনের সহসভাপতি ও জেলা কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদ নেই তার, যদিও রাঙামাটিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একনামে পরিচিত তিনি।
শনিবার কাউখালী উপজেলাতে নির্বাচন প্রচারণা কালে অমর কুমার দে অভিযোগ করেন সরকার দলীয় প্রার্থী গোপনে তার কর্মীদের হুমকী দিচ্ছে তবে সরাসরি তার নির্বাচনে বাধা না দিলেও গোপনে প্রচারণার রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছেন। তিনি আশা করছেন সরকার দলীয় প্রার্থীর ভয়ে কেউ সাথে না থাকলেও ঠিকই তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে।
তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে, রাঙামাটির দশ উপজেলা ও ১২টি থানা নিয়ে গঠিত রাঙামাটি সংসদীয় আসনের দুর্গম অঞ্চলের ১৮টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টার দিয়ে যেতে হয় বিধায় জেলায় যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম করা জরুরি। রাঙামাটিকে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন নগরী গড়ে তোলা এবং রেল যোগাযোগ স্থাপন করা; রাঙামাটি শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরবর্তী রাউজান থেকে গ্যাস সঞ্চালন লাইন চালু; পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সকল সম্প্রদায়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা; পার্বত্য চুক্তিতে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো অধিকারের কথা লেখা নেই, সুতরাং জেলা পরিষদে দুইজন হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করে পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান; রাঙামাটিতে বিমানবন্দর স্থাপন এবং ভূমি বিরোধ নিষ্পতি করে পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি রক্ষা করা।
অন্যদিকে, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা আরো ছয় দিনের মতো বাকী থাকলেও অপর প্রার্থী তৃণমুল বিএনপির প্রার্থী মিজানুর রহমানের তার প্রচার-প্রচারনা এখনো দেখা যায়নি।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.