রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের বসন্ত পাংখোয়া পাড়া এলাকায় স্কুল পড়ুয়া এক ছাত্রী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। বড় দিনের উৎসব দেখতে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রী ছাত্রীকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রীটির পরিবার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, গেল ২৪ ডিসেম্বর রাতে বড় দিনের উৎসব দেখতে তারা আরো ৪জন ছেলে বন্ধু মিলে জুরাছড়ি উপজেলার বনযোগীছড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়ী থেকে রাঙামাটি সদর উপজেলার বালুখালী ইউনিয়নের বসন্ত পাংখোয়া পাড়ায় যায়। যাওয়ার পথে পরিত্যক্ত একটি জুম ঘরে তারা অবস্থানের সময় গেল ২৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৩টার দিকে একই এলাকায় ৩ জন যুবক মুখোশ পরিহিত অবস্থায় জুম ঘরে যায়। সেখানে যুবকরা তাদেরকে আঞ্চলিক দলের লোক বলে তার প্রভাব দেখিয়ে ছেলে-মেয়ে এক সাথে জুম ঘরে অবস্থান করা যাবে না বলে হুমকি দেয়। এতে তাদের মনে ভীতি সঞ্চার হয়। এক পর্যায়ে ছেলে বন্ধুদের জুম ঘরে রেখে ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রী ও তার বান্ধবীকে অন্যত্র নিয়ে যায়। এর মধ্যে রাসেল চাকমা নামে এক যুবক ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রীকে অন্য স্থানে এবং রাসেল চাকমা ও জিকো চাকমা নামে দুই যুবক অপর কিশোরীকে কিছু দুর নিয়ে যায়। সেখানে রাসেল জোরপূর্বক স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষন করে। তবে অন্য দুই যুবকের কাছে থাকা কিশোরীকে নিয়ে গেলেও তাকে ধর্ষন করেনি। একাধিকবার ধর্ষনের পর ওই স্কুল ছাত্রীকে ভোরের দিকে ছেড়ে দেওয়ার তাকে বিমর্ষ অবস্থায় দেখাতে পেয়ে স্থানীয়রা জেরা করলে ধর্ষনের ঘটনাটি খুলে বলে। ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রীটি স্থানীয় বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী ও তার বান্ধবীটি একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। ধর্ষক রাসেল একই উপজেলার বনযোগী ছড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। সে বিবাহিত ও মোটর সাইকেল ভাড়ায় চালিত চালক। অন্য দুজন যুবকের বাড়ীও একই ইউনিয়নে। এ ঘটনার পর পর অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
এদিকে পুলিশ ঘটনাটি শুার পর মঙ্গলবার দুপুরে জুরাছড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ককরেছে। তবে ঘটনাস্থলটি রাঙামাটি উপজেলা সদরে হলেও ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রী ও অভিযুক্তরা জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা। ঘটনার শিকার স্কুল ছাত্রী ও তার বান্ধবীকে মঙ্গলবার বিকালে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা জানান, ঘটনাটি তাকে স্থায়ী হেডম্যান ও মেম্বার অবগত করেছেন। ভিক্টিম পরিবারকে ডাক্তারী পরীক্ষা ও মামলা দায়ের জন্য রাঙামাটি শহরে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
জুরাছড়ি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা জানান, ঘটনাটি সত্য। এ ঘটায় রাসেল চাকমা ও রুবেল চাকমা এ ঘটনা সাথে জড়িত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা এখন পলাতক রয়েছে। তাদেরকে ধরতে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে বলা হয়েছে। এছাড়া কোন আঞ্চলিক দল যেন তাদেরকে আশ্রয়-প্রশয় না দেয় তার দলগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে।
জুরাছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, পুলিশ ঘটনাটি শুনা পর মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে ঘটনাস্থলটি জুরাছড়ি থানায় না হওয়ায় রাঙামাটি কতোয়ালী থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। তারাও ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ বলেন, এ ঘটনাটি পুলিশ অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। জড়িতদের ধরতে পুলিশসহ নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান পরিচালনা চালাচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা হবে।
--হিলবিডি২৪/সম্পাদনা/সিআর.